সৌদি আরবে নিখোঁজ মেয়েকে ফেরত চান বাবা

সৌদি আরবে যাওয়ার আগে দুবাইতে চাকরি করেছেন নরসিংদীর নুরুন্নাহারভাগ্য বদলানোর জন্য মেয়েকে বিদেশ পাঠিয়েছিলেন হাজী নূর নবী। এখন ভাগ্যের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছেন এই বৃদ্ধ বাবা। তার আকুতি মেয়েকে ফেরত পাওয়ার। তার মেয়ের নাম নুর নাহার। নরসিংদী সদর থানার পাকুরিয়া গ্রামে তাদের বাড়ি। সচ্ছল জীবনযাপনের আশায় ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবের মদিনায় যান নুর নাহার। তার পাসপোর্ট নম্বর BL- 0081184 এবং BA- 0993657।    

নুর নাহারের বিদেশে কাজ করার অভিজ্ঞতা নতুন নয়। এর আগেও তিনি দু’বছর কাজ করেছেন দুবাইয়ে। সেখান থেকে ফিরে পুনরায় গৃহকর্মীর চাকরি নিয়ে পাড়ি জমান সৌদি আরবে। নুর নাহারের বাবা হাজী নূর নবীর অভিযোগ—সৌদি আরবে যাওয়ার পর চার মাস তার ওপরে কফিল (মালিক) অনেক অত্যাচার করে। অত্যাচার সহ্য করেই নুর নাহার কাজ করতে থাকে। মালিক তাকে চার মাসের বেতনও দিয়েছিল। কিন্তু এরপর থেকে মেয়ের আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। সে কোথায় আছে, কেমন আছে কিছু জানেন না তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা।

হাজী নূর নবী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘লোক মারফতে জানতে পারি আমার মেয়েকে ওই দেশে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। মেয়ের কোনও খোঁজ নাই বাবা। আপনারা আমার মেয়েরে দেশে আনার ব্যবস্থা করেন। এই বৃদ্ধ বয়সে আমি অসহায়ের মতো মেয়ের আশায় বসে আছি।’

তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে কথা হইছিল অনেক আগে। সে আমারে বলছে, কফিল তারে নির্যাতন করে। ঠিকমতো খাইতে দেয় না। চার মাসের বেতন  দিছে। আর কিছু দেয় নাই। আমার মেয়ের কী অবস্থা আমি জানি না, বাবা। আমার মেয়েরে আমি ফেরত চাই।’

নূর নবী আরও  বলেন, ‘নুর নাহারের স্বামী ও সংসার আছে। পরিবারের সবার সুখের কথা চিন্তা কইরা বিদেশ গেছে। বিদেশ গিয়া আমার মাইয়ার কী হাল হইছে জানি না। নরসিংদী জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে গিয়ে কথা বলেছি। তারা আমাকে সব কাগজপত্র বুঝায় দিয়া ঢাকায় একটা আবেদন করতে বলেছে। আমি যা যা করার লাগে করছি। অহন আমার মেয়েরে ফেরত আইনা দেন বাবা।’

এদিকে, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, হাজী নূর নবীর অভিযোগের পর নুর নাহারকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট দূতাবাসকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।  

বনানীর গালফ ওভারসিজের মাধ্যমে সৌদি আরবে গেলেও সেই ওভারসিজের কেউই জানেন না নুর নাহার এখন কোথায় আছেন। ওভারসিজের মালিক মোস্তাক হোসেনের কাছে নুর নাহারের অবস্থান জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাকে দুদিন সময় দিন,  দুদিন পর আমি জানাচ্ছি।’