যাত্রীদের চাপ নেই সায়েদাবাদে

সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপ নেই সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে। তাই বেশিরভাগ বাসচালকরা অলস সময় পার করছেন। বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গে যাতায়াতকারী বাসগুলো যাত্রীর অপেক্ষায় সময় গুণছে। তাদের ক্ষোভ— ঈদের সময় মহাসড়কের যানজট না থাকলেও যাত্রীরা মনে করছেন, রাস্তায় প্রচুর যানজট। সেই কথা চিন্তা করেই বাসে সরাসরি গন্তব্যে যাতায়াত করতে চাচ্ছেন না যাত্রীরা।

বুধবার (১৩ জুন) সরেজমিনে দেখা গেছে, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে যাত্রীদের আনাগোনা প্রায় নেই বললেই চলে। টার্মিনালের কানায় কানায় বাস ভরপুর।  ঘণ্টাদুয়েক পর কেউ কেউ বাস সামনে নিয়ে এসে হাঁকডাক দিচ্ছেন। আবার কেউবা টার্মিনাল থেকে বাস বের করার অনুমতির অপেক্ষায় বসে আছেন। টার্মিনালের বিভিন্ন কাউন্টারের কথা বলে জানা যায়, দক্ষিণবঙ্গের বেশির ভাগ যাত্রী মহাসড়কের পরিবর্তে লঞ্চ কিংবা ট্রেনে যাতায়াত করছেন। বিরূপ আবহাওয়ার কথা চিন্তাও করেন না লঞ্চে ভ্রমণকারীরা। বরিশাল, পটুয়াখালী, কুয়াকাটা, পিরোজপুর, বরগুনা, বাগেরহাটের যাত্রীরা বেশিরভাগই লঞ্চে যাতায়াত করেন। আবার অন্যদিকে, খুলনা, গোপালগঞ্জ, বরিশালের কিছু যাত্রী লোকাল বাসে করে মাওয়া ঘাট পর্যন্ত গিয়ে, ফেরি পার হয়ে ওপাড় থেকে ফের লোকাল বাসে করে গন্তব্যে যান।

যাত্রীর ভিড় নেই সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালেবরিশালগামী হামিম পরিবহন, সাকুরা পরিবহন, রিপন মল্লিক পরিবহন, সৌদিয়া পরিবহনের কাউন্টারে কথা বলে জানা গেছে, যাত্রীদের কোনও চাপ নেই। ঈদে সাধারণত এরকম হয় না, কিছু যাত্রী পাওয়া যায় বরিশাল রুটের। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম। হামিম পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার ইব্রাহিম বলেন, ‘বরিশালের মানুষ বেশিরভাগ সময় লঞ্চে যায়। কিন্তু ঈদের সময় কিছু যাত্রী হলেও আমরা পাই। এবার সেরকম কিছু দেখতেসি না। যাত্রীরা রাস্তার খবর জানে না।’

পর্যাপ্ত যাত্রী না থাকায় অলস বসে আছে বাসগুলো, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের দৃশ্যঅন্যদিকে, খুলনা রুটে চলাচলকারী বাসচালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যাত্রীদের চাপ একেবারেই নেই। তিন ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রেখেও একটি বাস ভর্তি করতে পারছেন না তারা। খুলনাগামী বনফুল পরিবহন, আরাফাত এন্টারপ্রাইজ, সুন্দরবন ক্লাসিকের কাউন্টারে লোক সমাগম নেই। অনেকক্ষণ ধরে হাঁকডাক দিয়েও যাত্রী পাওয়া মুশকিল। দীর্ঘসময় পরে একজন যাত্রী আসলেও কম দামে কমে টিকিট চাচ্ছেন। তাই বাধ্য হয়ে কম দামেই টিকিট বিক্রি করতে হয় বলেও জানান তারা। চালকদের অভিযোগ— যাত্রীরা রাস্তায় যানজট মনে করে ভেঙে ভেঙে লোকাল বাসে যান। ফেরি বা লঞ্চ পার হয়ে ফের লোকাল গাড়িতে বাড়ি যান। বনফুল পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার আন্নু বলেন, ‘ঘাট ক্লিয়ার। রাস্তা ক্লিয়ার, তারপরও যাত্রীরা ডাইরেক্ট বাসে ওঠেন না। সাধারণত একটা ট্রিপ মারলে ৩০ হাজার টাকা আসে। এখন আসে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। তাও আবার ফেরত আসার সময় ১২শ’  টাকাও আয়  হয় না। এক ট্রিপে খরচ আছে প্রায় ১০ হাজার টাকা। রাস্তা যে ফাঁকা মানুষ বুঝে না।’

খুলনাগামী বাসচালক ফজল হোসেন বলেন, ‘গত সাতদিন পর গাড়ি নামাইলাম। তাও যাত্রী নাই। এই সাতদিন পুরা বসা ছিলাম।’