আবারও লাগাতার অবস্থানের ঘোষণা নন এমপিও শিক্ষকদের

নন এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের অবস্থান কর্মসূচির ডাক

প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবিতে আবারও লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে নন–এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীরা। সোমবার সকাল ১০টা থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই অবস্থান কর্মসূচি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মাহমুদুন্নবি ডলার।

তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রবিবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে টানা ৮ দিন অবস্থান কর্মসূচি পালনের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রমজান মাসের কারণে আমাদের ওই অবস্থান কর্মসূচি আধাবেলার ছিল। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এমপিওভুক্ত করা না পর্যন্ত আগামীকাল থেকে দিনরাত আমরা রাজপথে থাকবো।’

মাহমুদুন্নবি আরও বলেন, ‘২০১৮-১৯ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা নেই। আমাদের জন্য বাজেটে কোনও বরাদ্দ রাখা হয়নি। এতে আমরা হতাশ।’এরই ম‌ধ্যে আমরা জানতে পারি শিক্ষামন্ত্রী আগেরবারের মতই বলেছেন বাজেটে টাকা না থাকলেও পর্যায়ক্রমে এমপিওভুক্ত করা হবে। আমরা তার এ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি। সুনির্দিষ্ট কোনও গেজেট প্রকাশ না হলে আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘ ৮ বছর পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্তির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীরা ১৫-২০ বছর ধরে বিনা বেতনে চাকরি করছেন। অনেকের চাকরি আছে আর ৫-১০ বছর। এ কারণে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আর অপেক্ষায় না রেখে চলতি সরকারের মেয়াদে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি। বাজেট বরাদ্দ যথেষ্ট না হলেও আমরা কম বেতন নিতে রাজি আছি। পর্যায়ক্রমে কয়েক বছরে বেতন সম্পূর্ণ করা হলে তাতে আমাদের আপত্তি নেই। আমরা আশা করি এই সরকারের আমলেই এমপিওভুক্তির কাজ সম্পন্ন হবে। এমপিওভুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না থাকলে আমাদের বাঁচা-মরার মানবিক আবেদন নিয়েই জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান করবো।’

উল্লেখ্য, এমপিওভুক্তির দাবিতে নন এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার কর্মসূচি শুরু করেন। নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ডাকে টানা ওই অনশনের একপর্যায়ে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তার একান্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান সেখানে গিয়ে আশ্বাস দেন। এরপর শিক্ষক-কর্মচারীরা কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন। তবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের যে বাজেট প্রস্তাব করেন, সেখানে নতুন এমপিওভুক্তির বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি। এবারের বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের জন্য ৫৩ হাজার ৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে খাতওয়ারি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ। বাজেট বরাদ্দে প্রাথমিক বিদ্যালয়, কারিগরি প্রতিষ্ঠান ও অবকাঠামো নির্মাণে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।