ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়াগুলো হাইকোর্টকে জানালো বিআরটিএ

1659dcdb768903d5c174c23887b61d4d-596516b739cd3গাড়ি চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স কোন যোগ্যতার ভিত্তিতে দেওয়া হয় সে বিষয়ে হাইকোর্টে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। পাশাপাশি যেসব উপাদানের ভিত্তিতে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু বা নবায়ন করা হয় তাও প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
আদালতের পূর্ব নির্দেশনা অনুসারে, রবিবার (১২ আগস্ট) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো.খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। পরে এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ৭ অক্টোবর দিন ধার্য করেন আদালত।
এর আগে রাজধানীতে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় তাদের পরিবারকে জাবালে নুর পরিবহন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের বিষয়ে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী পঙ্কজ কুমার কুণ্ডু। এছাড়াও বিআরটিএ’র পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রফিকুল ইসলাম। আর রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
বিআরটিএ’র প্রতিবেদনের একটি অংশে (অ্যানেক্সার-১১) বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির থেকে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট চালানোর পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু/নবায়নের ক্ষেত্রে যোগ্যতা/শর্ত (criteria) কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ড্রাউভিং লাইসেন্স পেতে যেসব যোগ্যতার কথা বলা হয়েছে সেগুলো হলো- ১. বাংলা অথবা ইংরেজি লিখতে এবং বলতে পারা; ২. প্রার্থীর বয়স ২০ বছর হওয়া; ৩. রেজিস্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক প্রদত্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষার ঊপযুক্ততার মানদণ্ডে উত্তীর্ণপূর্বক শিক্ষানবীশ ড্রাইভিং লাইসেন্স গ্রহণ করা; ৪. শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ কমপক্ষে ২ (দুই) মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পর ড্রাইভিং কম্পিটেন্সি টেস্ট বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা; ৫. ড্রাইভিং কম্পিটেন্সি টেস্ট বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত পরীক্ষায় লিখিত, মৌখিক এবং ব্যবহারিক পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়া; ৬.আবেদনকারীর স্থায়ী ঠিকানার পুলিশ যাচাই প্রতিবেদন সঠিক হওয়া; ৭. রেজিস্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক প্রদত্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষার উপযুক্ত মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হওয়া; ৮. কমপক্ষে তিন বছর হালকা বা মধ্যম শ্রেণির মোটরযান চালানোর অভিজ্ঞতা না থাকলে কোনও আবেদনকারী মধ্যম বা ভারী (যে ক্ষেত্রে যেটা প্রযোজ্য) মোটরযান চালানোর ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবে না। তবে শর্ত থাকে যে, উপযুক্ত ক্ষেত্র বিবেচিত কোন শ্রেণীর লোকজনকে সরকার এই বিধির কার্যকারিতা থেকে অব্যাহতি প্রদান করতে পারবে। ৯. কমপক্ষে তিন বছর হালকা বা মধ্যম শ্ৰেণির মোটরযান চালানোর অভিজ্ঞতা থাকা সাপেক্ষে আবেদনকারী মধ্যম বা ভারী (যে ক্ষেত্রে যেটা প্রযোজ্য) মোটরযান চালানোর ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে পূর্বানুরুপে সংশ্লিষ্ট শ্রেণির শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স গ্রহণ করা এবং এর মেয়াদ কমপক্ষে ২ মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পর ড্রাইভিং কমপিটেন্সি টেস্ট বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়া এবং ১০. পরিবহন যানের চালকদের আঞ্চলিক পরিবহন কমিটি (আরটিসি) হতে ইস্যুকৃত পাবলিক সার্ভিস ভেহিকল অথরাইজেসন (পিএসভি) প্রাপ্ত হওয়া।

লাইসেন্স নবায়নের প্রক্রিয়া দুটি হচ্ছে মোটরযান পরিদর্শক কর্তৃক পরিচালিত ফিল্ড টেস্ট এ কৃতকার্য হওয়া এবং প্রার্থীদের রেজিস্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক প্রদত্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষায় (উপযুক্ততার মানদন্ডে) উত্তীর্ণ হওয়া৷
এর আগে ৩০ জুলাই এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট আদেশ দেন। সে রিটের শুনানি নিয়ে বিদ্যমান যে ট্রাফিক আইন আছে তা যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না এবং শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের নিহত দুই শিক্ষার্থীর প্রত্যেকের পরিবারকে ব্যাংক ইন্টারেস্টসহ দুই কোটি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স কোন যোগ্যতার ভিত্তিতে দেওয়া হয় সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে বিআরটিএ’কে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সে অনুসারে রবিাবার (১২ আগস্ট) বিআরটিএ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে।