উত্তরপত্রে ঘষামাজা, সাত দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা চেয়েছে মন্ত্রণালয়

শিক্ষা মন্ত্রণালয়

রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২০১৮ সালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্রে ঘষামাজার প্রমাণ পাওয়ায় এ বিষয়ে অধ্যক্ষের ব্যাখ্যা চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালককে আগামী সাত দিনের মধ্যে অধ্যক্ষের কাছ থেকে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নিয়ে তা মন্ত্রণালয়কে জানাতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আনোয়ারুল হক স্বাক্ষরিত আদেশে এই নির্দেশ দেওয়া হয়।

মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, ‘আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মতিঝিল, বনশ্রী ও মুগদা শাখায় ২০১৮ সালে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার খাতায় ঘষামাজা সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদনে সত্যতা পাওয়া গেছে। এমতাবস্থায় প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নিয়ে তা আগামী সাত দিনের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে পাঠানোর জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২০১৮ সালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ভর্তিতে উত্তরপত্রে ঘষামাজা করে ও রাবার দিয়ে মুছে ফেলে ভুল উত্তর শুদ্ধ করে লেখা হয়। এভাবে ফেল করা শিক্ষার্থীদের পাস করানোর অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। ঢাকা জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে জমা হয়েছে গত ৮ আগস্ট। তদন্ত প্রতিবেদনে ঘষামাজার প্রমাণ মিলেছে বলে উল্লেখ করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঘষামাজা ও রাবার দিয়ে মুছে সঠিক উত্তর লিখে পাস করানোর অভিযোগ ছিল প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগমের বিরুদ্ধে। এ কাজে তাকে সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে সহকারী প্রধান শিক্ষক আ. ছালাম খান, তার ভাই প্রকৌশলী আতিকুর রহমান, হিসাব সহকারী দীপা এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মো. কবির হোসেন ও আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে। তবে রাবার দিয়ে মুছে সঠিক উত্তর লেখার সঙ্গে অভিযুক্তদের সম্পৃক্ততা অনুসন্ধানে স্পষ্ট করা হয়নি।

 

তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দাখিলের পর বাংলা ট্রিবিউনে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পদক্ষেপ নেয়।

এর আগে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক) জাবেদ আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছিলেন, ‘আমরা কারণ জানতে চাইবো, ব্যাখ্যা চাইবো। অধ্যক্ষের জবাবসহ কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তার একটি সুপারিশসহ প্রতিবেদন পাঠাতে মাউশিকে নির্দেশ দেওয়া হবে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, উত্তরপত্রে ঘষামাজা করার বিষয়টি নিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন অভিভাবক শ্যামলী শিমু।

তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর অধিকতর তদন্তের দাবি করেন অভিভাবক শ্যামলী শিমু। উত্তরপত্রে কারা ঘষামাজা করেছে তা খুঁজে বের করার এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন তিনি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম।