আমরা ন্যায়বিচার পাইনি, উচ্চ আদালতে যাবো: সানাউল্লাহ মিয়া

অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া (ফাইল ছবি)

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আর শুনানি না করে রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করায় ন্যায়বিচার পাননি বলে মন্তব্য করেছেন মামলাটির প্রধান আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া। মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) আদালত এ মামলার আর শুনানি না নিয়ে ২৯ অক্টোবর রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণের পর সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন সানাউল্লাহ মিয়া।

রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে আজ সকালে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচার কাজ শুরু হলে প্রধান আসামি খালেদা জিয়া শুনানির সময় হাজির না থাকায় দুদকের আইনজীবীর দাবি অনুযায়ী আর শুনানি না করে রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেন  বিচারক আখতারুজ্জামান।

খালেদা জিয়ার এই আইনজীবী বলেন, আমরা ন্যায়বিচার পাই নাই। আমরা এ আদেশের (রায়ের আদেশের) বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করবো।

তিনি আরও বলেন, আজকে আমরা আদালতে ল-ইয়ার সার্টিফিকেট দিয়ে বিচারককে বলছি  হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করবো। বিচারক আমাদের এ আবেদন নামঞ্জুর করে রায়ের তারিখ ধার্য করেন।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, আমরা দেখেছি আদালত শুরুর আগে পাবলিক প্রসিকিউটরের সঙ্গে আলাপ করে বিচারক তার এজলাসে উঠেন।

এদিকে খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সর্বপ্রথম আদালতকে বলেছি ফৌজদারি কার্যবিধি ৫৪০(এ) অনুযায়ী জেলে থাকা কোনও আসামির হাজিরা থেকে মওকুফ পাওয়ার কোনও বিধান নেই। এই প্রথম আমরা দেখলাম জেলে থাকা আসামিকে হাজিরা থেকে মওকুফ করা হয়েছে। খালেদা জিয়াই হলেন তার উদাহরণ।

তিনি আরও বলেন, গতকাল ( সোমবার) হাইকোর্ট তার আদেশে বলেন, আমরা আশা করবো খালেদা জিয়া আদালতে এসে মামলার বিচার মোকাবিলা করবেন।  আমরা আদালতকে আজকে এটাও বলেছি গতকালের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করবো। কিন্তু, আমাদের এ আবেদন নামঞ্জুর করে তিনি রায়ের তারিখ ঘোষণা করেন। এটা বেআইনি আদেশ। তিনি (আদালতের বিচারক) একের পর এক বেআইনি আদেশ দিচ্ছেন।

এদিকে দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল সাংবাদিকদের বলেন, ‘খালেদা জিয়া দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাবস্থায় মেট্রো মেকার্সসহ অন্যান্য লোকের কাছ থেকে নেওয়া তিন কোটি ১০ লাখ টাকা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট গঠনের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। তিনি যে অ্যাকাউন্ট করেছিলেন সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী পদ শব্দটিও ব্যবহার করেননি।’

তিনি বলেন, এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৩২জন সাক্ষী রয়েছে। আসামিরা আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন। সর্বশেষ এ মামলায় গত আড়াই বছর কোনও যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়নি। আদালত বারবার তাদের যুক্তিতর্ক উত্থাপন করার জন্য অনুরোধ করেছেন। কিন্তু তারা একগুঁয়েমি দেখিয়ে আদালতের কথা অমান্য করে বারবার ‍যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য সময় চেয়ে চলেছেন, আদালতের কথায় সম্মান প্রদর্শন করেননি।

তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচার চলা ও আদালতের প্রতি অনাস্থার বিষয়ে আসামিপক্ষে হাইকোর্টে গেলে উচ্চ আদালত তা খারিজ করে দেন। হাইকোর্টে আদেশ হওয়ার পরও তারা মামলাটিতে কালক্ষেপণের জন্য যুক্তিতর্ক শুনানির সময় চেয়ে আবেদন করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা রায়ের তারিখ ঘোষণার জন্য আবেদন করলে আবেদনটি আদালতের কাছে যুক্তিযুক্ত মনে হওয়ায় আদালতে মামলার কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণা করে রায়ের তারিখ ঘোষণা করেন।