পুলিশের ‘গায়েবি মামলায়’ টিআইবির উদ্বেগ



টিআইবিঘটনাস্থলে অনুপস্থিত, বিদেশে অবস্থানরত, এমনকি মৃত ব্যক্তিদেরও আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে পুলিশের মধ্যে। এ মন্তব্য করে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে এসব ‘গায়েবি মামলা’ দায়েরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
বুধবার (১৭ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে গায়েবি মামলাকে পুলিশের অদক্ষতা ও দায়িত্বে অবহেলার পরিচায়ক উল্লেখ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে এ ধরনের আত্মঘাতী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকারও আহ্বান জানানো হয়েছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের সই করা ওই বিবৃতিতে বলা হয়, “সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘গায়েবি মামলা’ দায়েরের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে আসামি হিসেবে ঘটনাস্থলে অনুপস্থিত, বিদেশে অবস্থানরত এমনকি মৃত ব্যক্তিদেরও সম্পৃক্ত করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য হিসেবে পুলিশের একাংশের এমন কর্মকাণ্ড পেশাদারিত্বের উদ্বেগজনক অবক্ষয়ের দৃষ্টান্ত।”
এতে বলা হয়, ‘সরকার তথা ক্ষমতাসীন দলের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ নির্দেশনা বা চাপে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একাংশের দলীয় প্রভাবে কাজ করার দৃষ্টান্ত নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ তথা অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা অনেকাংশে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। তা সত্ত্বেও পুলিশ বাহিনীর একাংশের ঢালাওভাবে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ নেই।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত হয়ে পুলিশের মতো একটি প্রতিষ্ঠান পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হলেও কী কারণে মৃত ও দেশে বা ঘটনাস্থলে অনুপস্থিত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করা হবে তা দেশবাসীর কাছে ব্যাখ্যা করার দায় পুলিশ কর্তৃপক্ষের। প্রশ্ন উঠতেই পারে, এটি কি পুলিশের একাংশের অদক্ষতা, না নগ্ন দায়িত্বহীনতা? আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ওপর রাজনৈতিক প্রভাব একদিকে যেমন আইনের শাসনের পথে প্রতিবন্ধকতা, অন্যদিকে পুলিশ বাহিনীতে এ ধরনের পেশাগত দুর্বলতা ও অদক্ষতা অব্যাহত থাকলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও আইনের শাসনের প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট হবে বলে টিআইবি উদ্বিগ্ন।’
বিবৃতিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সব সরকারি প্রতিষ্ঠানকে সব ধরনের প্রভাব মুক্ত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি। একইসঙ্গে পুলিশ বাহিনীকেও সব ধরনের প্রভাবমুক্ত হয়ে দায়িত্ব পালনে দৃঢ়তা ও সৎসাহসের পরিচয় দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।