ঢাবিতে আড্ডা দেওয়ায় ছাত্রদলের দুই নেতাকে মারধর!





ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে আড্ডা দেওয়ার সময় ছাত্রদলের দুই নেতাকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে তাদের মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
মারধরে আহত ওই দুই ছাত্রদল নেতা হলেন কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূইয়া এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সদস্য রায়হানুল আবেদিন। তাদের রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রায়হানুল আবেদিনকে বেশি মারধর করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ইউনুছ ও সূর্যসেন হলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শরিফুল আলম শপুর নেতৃত্বে ২০ জনের মতো ছাত্রলীগের নেতাকর্মী তাদের মারধর করেন।
এর আগে শপুর বিরুদ্ধে কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্রদের মারধরের অভিযোগ উঠেছিল। অন্যদিকে ইউনুসের বিরুদ্ধে ক্যান্টিনে ফাও খাওয়া, ঢাবির সাবেক এক শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে নির্যাতন, ছিনতাই ও চাঁদা দাবির অভিযোগ রয়েছে। এর আগে কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে এসব বিষয়ে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। হল প্রাধ্যক্ষের কক্ষ ভাঙচুর ও বিভিন্ন অপকর্মের দায়ে তাকে একবার বহিষ্কারও করা হয়েছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্রদল নেতা মিনহাজুল ইসলাম ও রায়হানুল আবেদিন টিএসসিতে বসে চা খাচ্ছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা আবু ইউনুস ও শপুর নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী তাদের হাকিম চত্বরে নিয়ে যায়। সেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের এলোপাতাড়ি মারধর করেন। একপর্যায়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক উপ-আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক ইমরান হোসেন ঘটনাস্থলে যান। তিনি ছাত্রদলের ওই দুই নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তিনি কোনও ধরনের অপরাধ খুঁজে পাননি বলে সাংবাদিকদের কাছে স্বীকারও করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা এসে আহতদের নিয়ে যান।
প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে দেওয়ার সময় আহত ছাত্রদল নেতা মিনহাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা টিএসসিতে বসে চা খাচ্ছিলাম। পরে ছাত্রলীগের কয়েকজন এসে আমাদের ধরে নিয়ে মারধর করে। আমাদের অপরাধ আমরা ছাত্রদল করি।’
ছাত্রদলের অন্য নেতা জানান, তারা টিএসসিতে বসে চা খাচ্ছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগের ইউনুস ও শপুসহ কয়েকজন হাকিম চত্বর আসে। তাদের মধ্যে নাশতকার কোনও প্ল্যান ছিল কিনা সেটা জানতে চাওয়া হয়েছে। তবে তাদের কাছে নাশকতার কোনও তথ্য ছিল না।
তবে মারধর করার কথা অস্বীকার করেন ছাত্রলীগ নেতা সৈয়দ শরিফুল আলম শপু। তিনি বলেন, ‘মারধরের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তারা আমাদের কাছে অপরিচিত মনে হচ্ছিল। তাই তাদের গিয়ে জিজ্ঞাসা করি। তারা জানায় ছাত্রদলের নেতা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে তুলে দিই।’
মারধর করার অভিযোগ থাকা অন্য ছাত্রলীগ নেতা আবু ইউনুসকে ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমি ঘটনাটি শুনেছি। এটা খুবই খারাপ বিষয়। আমি ক্যাম্পাসের বাইরে আছি। এসে খোঁজ নেবো।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘আমি ঘটনা শুনেছি। এ ধরনের ঘটনা কাম্য নয়। কারা মারধরে জড়িত তা খুঁজে বের করতে প্রক্টর টিমকে বলা হয়েছে। আর যদি কেউ অভিযোগ করে তবে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’