‘গায়েবি’ মামলা নিয়ে করা রিটের আদেশ রবিবার

সুপ্রিম কোর্টআওয়ামী লীগ ব্যতীত অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘গায়েবি’ মামলার তদন্ত বন্ধ, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পরবর্তীতে এ ধরনের মামলা না দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী রবিবার (২৫ নভেম্বর) আদেশের দিন নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন  হাইকোর্টের একক বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. মাসুদ রানা। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

এর আগে আওয়ামী লীগ ব্যতীত অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ‘গায়েবি’ মামলার তদন্ত বন্ধ, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পরবর্তীতে এ ধরনের মামলা না দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানি নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত আদেশ দেন হাইকোর্টের অন্য একটি বেঞ্চ। ফলে নিয়ম অনুসারে মামলাটি প্রধান বিচারপতির কাছে যায়। পরে প্রধান বিচারপতি মামলাটির শুনানির জন্য নতুন বেঞ্চ গঠন করে দেন।  এরপর  গত ২১ অক্টোবর বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ দ্বিধাবিভক্ত আদেশ দেন।

আদালতে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে পৃথক পৃথক আদেশ দেন হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ। জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী  তার আদেশে ‘গায়েবি’ মামলা হিসেবে অভিযোগকারীসহ অন্যান্য ব্যক্তির বিরুদ্ধে করা মামলা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। একইসঙ্গে ঢাকায় দায়ের হওয়া মামলাগুলো তদন্ত করে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলে পুলিশের মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি মামলার পরবর্তী তারিখ ১৭ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেন।

এরপর আদালতের কনিষ্ঠ বিচারপতি আশরাফুল কামাল তার আদেশে বলেন, ‘রিটটি সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুসারে গ্রহণযোগ্য নয়। তাই এ রিটটি আমি প্রত্যাখ্যান (খারিজ) করলাম।’

প্রসঙ্গত, গত ২৩ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন অ্যাডভোকেট এ কে খান। জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, সানাউল্লাহ্ মিয়ার পক্ষে এই রিট দায়ের করা হয়।

গত ২২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটের আবেদন করা হয়। রিটে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সারাদেশে বিএনপির জ্যেষ্ঠ আইনজীবীসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে করা চার হাজার মামলা এবং তিন লাখেরও বেশি লোককে আসামি করার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করার জন্য স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়।’

এছাড়া, আওয়ামী লীগ ব্যতীত অন্যান্য দলের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে এপর্যন্ত যত গায়েবি মামলা দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর তদন্ত বন্ধ এবং এ গায়েবি মামলাগুলোর বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে কমিটি গঠন করে ঘটনার তদন্ত এবং তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে যেন এ ধরনের মামলা দেওয়া না হয়, তার নির্দেশনা চাওয়া হয়।

পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ব্যতীত অন্যান্য রাজনৈতিক দলের অগণিত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশি ক্ষমতা অপব্যবহার করে গায়েবি বা আজগুবি মামলা দায়ের করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, রিটে সে বিষয়ে রুল জারির আরজি জানানো হয়েছিল।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের আইজি, ডিএমপি কমিশনার, ডিএমপি রমনা জোনের ডেপুটি ও অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার, রমনা, পল্টন ও শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ মোট নয় জনকে রিটে বিবাদী করা হয়।