সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস কেন অবৈধ নয়, হাইকোর্টের রুল

 

আদালতসরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের অনুমতি দেওয়া সংক্রান্ত ধারাটি কেন অসাংবিধানিক, বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

এক রিট আবেদনের শুনানিতে মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান এবং বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
১৯৮২ সালের দ্য মেডিক্যাল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবরেটরি (রেগুলেশন) অর্ডিনেন্সের ৪ ধারায় বলা হয়েছে, সরকার নিবন্ধিত চিকিৎসকরা তাদের অফিস সময়ে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবেন না।
মামলার বিবাদী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি এবং বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশেনের (বিএমএ) সভাপতিকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়াও মামলার বিবাদীদের একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করে সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়ন করে আদালতে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার পালোয়ান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি অফিস সময়ে সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ আইনজীবী। তারা হলেন আবদুস সাত্তার পালোয়ান, সালাউদ্দিন রিগান, সুজাত মিয়া, মো. আমিনুল হক এবং মো. কাওছার উদ্দিন মণ্ডল।
রিটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশেনের (বিএমএ) সভাপতিকে বিবাদী করা হয়।
রিটে সরকারি চিকিৎসকদের সম্পূর্ণভাবে প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে রুল জারির আবেদন জানানো হয়। এছাড়াও সরকারি হাসপাতালের সব কার্যক্রম তদারকি করারও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের অনিয়ম বন্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশনা চাওয়া হয়।

একই সঙ্গে রিট আবেদনে অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা গঠনে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের আরজি জানানো হয়।
এদিকে অফিস সময়ে সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধে গত ২৯ জানুয়ারি সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ দেন আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান।
ওই নোটিশে বলা হয়, সরকারি চিকিৎসকদের থেকে চিকিৎসা পাওয়া প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু সম্প্রতি নিজ কর্মস্থল সরকারি হাসপাতাল রেখে অনেক চিকিৎসক তাদের ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসা দিচ্ছেন। সরকারি হাসপাতালের কর্মঘণ্টা চলাকালে সরকারি চিকিৎসকদের এমন অসদাচরণ আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ। তাই সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধে পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের এ নোটিশ পাঠানো হয়। ওই নোটিশের জবাব না পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করা হয়।

আরও পড়ুন...
জীবন নিয়ে বাণিজ্য আমরা চাই না: হাইকোর্ট