‘এসএসসির ফল পরিবর্তনের নামে প্রতারকরা ১৫-৩০ হাজার টাকা নিত’

ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন

ভুয়া প্রশ্নপত্র তৈরি করে তা ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে প্রতারণা করছিল একটি চক্র। তাদের আইটি বিশেষজ্ঞ দল রেজাল্ট শিট তৈরির সফটওয়্যারের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে এসএসসির রেজাল্ট পরিবর্তনে সক্ষম– এম‌ন কথা বলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছিল। অবশেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে এই প্রতারক চক্রটি।  

বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন।

এর আগে, মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাতে মতিঝিলের ফকিরাপুলের জোনাকি হোটেলের সামনে থেকে এসএসসি পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী ও পরীক্ষার ফলাফল পরিবর্তনের নিশ্চয়তাদানকারী ৪ আসামিকে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য (উত্তর) বিভাগ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো– মো. আবদুল ফাহিম (২০), মো. শামীম আহমেদ (১৯), মো. সোহেল রানা (১৭), মো. নবীন আলী (২২)। আসামিরা নিজেদের কম্পিউটার হ্যাকার বলেও দাবি করতো।

সংবাদ সম্মেলনে আবদুল বাতেন বলেন, ‘আসামিরা ফেসবুক গ্রুপ খুলে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করতো যে, তারা এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল পরিবর্তন করে দেবে। এজন্য তাদের আইটি বিশেষজ্ঞ দল রয়েছে, যারা এসএসসির রেজাল্ট শিট তৈরির সফটওয়্যারের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে রেজাল্ট পরিবর্তন করতে পারবে। কোনও শিক্ষার্থী “এ গ্রেড” পেলে সেটাকে “এ প্লাস” এবং “বি গ্রেড” পেলে সেটাকে “এ গ্রেড” করে দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে ১৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে নিতো।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডিবির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, গ্রেফতার হওয়া ফাহিম দীর্ঘদিন যাবৎ ফেসবুক, মেসেঞ্জার, গ্রুপ মেসেঞ্জার, ইমো, ইউটিউব এবং হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে এসএসসিসহ বিভিন্ন চাকরি, মেডিক্যাল ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্নপত্র ফাঁস করে আসছিল। ২০১৮ সালে র‌্যাবের হাতে একই অপরাধের কারণে সে গ্রেফতার হয়েছিল। ৬ মাস কারাগারে থেকে জামিনে বের হয়ে আবারও সে একই কাজে লিপ্ত হয়। সে “এসএসসি অল বোর্ড”, “এসএসসি অল বোর্ড সেকেন্ড”, “রেজাল্ট চেঞ্জ বিডি” নামে গ্রুপ খুলে সেখানে সদস্য সংগ্রহ করে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতো। তাদের মধ্যে শামীম ও সোহেল রানা ২০১৮ সাল থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত। নবীন আলী পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক তৈরি করে ভুয়া প্রশ্ন বিক্রি করতো।’

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এই চক্রটিকে পুলিশ গ্রেফতার করে সক্ষম হলেও এ বিষয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। কোমলতি শিক্ষার্থীরা না বুঝে, পড়াশোনা না করে সহজে ভালো রেজাল্ট করার জন্য এসব বিজ্ঞাপন দেখে বিভ্রান্ত হচ্ছে। এজন্য সবার মধ্যেই সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।’

আরও পড়ুন: 

এসএসসির ফল পরিবর্তনের ‘নিশ্চয়তাদানকারী’ ৪ জন আটক