মুন্সীগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে হত্যার অভিযোগ, পুলিশের দাবি ‘বন্দুকযুদ্ধ’

সংবাদ সম্মেলনে সেলিমের স্ত্রী ও মামুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান থানা পুলিশের বিরুদ্ধে কেরানীগঞ্জ উপজেলার সোনাকান্দা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ সেলিমকে ধরে নিয়ে হত্যার অভিযোগ তুলেছে তার পরিবার। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন নিহত মোহাম্মদ সেলিমের স্ত্রী নাসরিন বেগম। তবে সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাবি করেছেন, “এক দল নৌডাকাত ধরতে চালানো অভিযানে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে সেলিম।”
সংবাদ সম্মেলনে নাসরিন বেগম দাবি করেন, ‘২০০৬ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে কেরানীগঞ্জের রুহিতপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় মামলা হলে আদালত দুই আসামিকে ফাঁসি আর চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এর জের ধরে ১২ বছর পর সাজাপ্রাপ্তদের আত্মীয়-স্বজনের ইন্ধনে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মোহাম্মদ সেলিমকে গত ১ মার্চ (শুক্রবার) গুলি করে হত্যা করে পুলিশ।’
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারের স্ত্রী রফিজা বেগম দাবি করেন, ‘শুক্রবার (১ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে সিরাজদিখান থানার শেখেরনগর ফাঁড়ির ইনচার্জ সেলিমকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান। এরপর তাকে চরসোনাকান্দায় নিয়ে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে মামলা নেয়নি পুলিশ।’
এ বিষয়ে সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে শেখেরনগর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের একটি দল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সিরাজদিখান থানার রাজানগর ইউনিয়নের ফুলহার চরের কাছে ধলেশ্বরী নদীতে একদল নৌডাকাতকে গ্রেফতার করতে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ট্রলারে অবস্থানরত ৬ থেকে ৭ জন ডাকাত পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে। পুলিশও পাল্টা গুলি করলে ৫ থেকে ৬ জন ডাকাত ট্রলার ফেলে পালিয়ে যায়। পুলিশ গুলিবিদ্ধ এক ডাকাতকে আহত অবস্থায় সিরাজদিখান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে জানা যায়, নিহত ডাকাত দলের সদস্য মো. সেলিম (৪২) ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানার সোনাকান্দা গ্রামের মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে কেরানিগঞ্জ থানায় হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।’
বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হত্যার অভিযোগের বিষয়ে ওসি বলেন, ‘তার পরিবার যেকোনও দাবি করতেই পারে। সেলিমের বিরুদ্ধে আমাদের থানায় নয়, কেরানীগঞ্জ থানায় একাধিক মামলা ছিল। আমাদের থানায় মামলা থাকলে তারা বলতে পারতেন যে আমরা মিথ্যা মামলা দিয়েছি। তাছাড়া বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর সেখানে ট্রলারসহ একটি বন্দুক ও অন্যান্য অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে।’