‘আমি ডাকসু চেয়েছি, কিন্তু এই ডাকসু চাইনি। যে নির্বাচনকে প্রতিটি দলই (সংগঠন) প্রত্যাখ্যান করছে, সেই নির্বাচন কিভাবে গ্রহণযোগ্য বা সফল নির্বাচন হয়? হলে ভোটকেন্দ্র করলে এধরনের ঘটনা ঘটতে পারে— এমন শঙ্কা আমার আগেই ছিল। বাইরে কেন্দ্র করার বিষয়ে পরামর্শও দিতে চেয়েছি।’
গত দু’বছর ধরে ডাকসুর দাবিতে নানা সময় অনশনকারী ওয়ালিদ আশরাফ বাংলা ট্রিবিউনকে এসব কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, সোমবার (১১ মার্চ) ডাকসু নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলাকালেই অনিয়মের অভিযোগ এনে ছাত্রলীগ ছাড়া সবকয়টি সংগঠন নির্বাচন বর্জন করে। এরপর রাতে ডাকসুর কেন্দ্রীয় পদের ফলাফলে ভিপি পদে ছাত্রলীগের প্রার্থীকে হারিয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনের নেতা নুরুল হক নুরকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে ছাত্রলীগও এই নির্বাচন বাতিলের দাবি জানায়।
এই পরিস্থিতি এড়ানো যেত উল্লেখ করে ওয়ালিদ আশরাফ আরও বলেন, ‘হলে হলে ভোটকেন্দ্র না করলে ভালো হতো। কেননা, এখন যেসব কনফিউশন তৈরি হয়েছে সেগুলো হতো না। আমার পর্যবেক্ষণ বলছে, কুয়েত মৈত্রী বা রোকেয়া হলে ব্যালট পাওয়া নিয়ে যে ঘটনা ঘটেছে, সেই ধরনের ঘটনা ছেলেদের হলেও ঘটে থাকতে পারে। কিন্তু সেটা তো এখন চেক করা সম্ভব না। একইসঙ্গে সব দলই পুনর্নির্বাচন চাচ্ছে। যে নির্বাচন নিয়ে সব সংগঠন পুনর্নির্বাচন দাবি করে সেটি কিভাবে সফল নির্বাচন হয়?’
নতুন ভিপিকে মেনে না নিয়ে ছাত্রলীগের আন্দোলনে নামা প্রসঙ্গে ওয়ালিদ বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দুটি দল ও তাদের দুই ছাত্র সংগঠনের রাজনীতিও একে-অন্যকে দোষারোপ করে টিকে থাকার রাজনীতি। এর বাইরে তারা অন্য ধরনের রাজনীতি জানে না। এ প্রক্রিয়ায় যাতে অন্য কেউ না ঢুকতে পারে, এটার জন্য তাদের চেষ্টা থাকে। যদিও চেতনাধর্মী প্রত্যাশাভিত্তিক কিছু ছাত্র সংগঠন গড়ে উঠেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের জায়গা থেকে স্বতন্ত্র বেশকিছু পদে দাঁড়ানো এবং সফলভাবে বের হয়ে আসার ঘটনা অনন্য। স্বতন্ত্রদের অংশগ্রহণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। এটা আমাদের বড় পাওয়া।’
প্রশাসন তার পরামর্শগুলো কানে না তোলায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ওয়ালিদ বলেন, ‘২৬ তারিখ (ফেব্রুয়ারি) থেকে পরামর্শ দিতে চেষ্টা করেছি। ডাকসুর গুণগত মান কিভাবে ভালো করা যায়, নির্বাচন কিভাবে গঠনমূলক করা যেত, এসব আমি বারবার বলতে চেয়েছি। ঊন-নব্বইয়ের নির্বাচনের সময় গঠনতন্ত্র যেমন ছিল, সেভাবে রাখাই ন্যয়সঙ্গত ছিল। এবারে বিশেষ কিছু পরিবর্তন করেছে তা নয়। বরং ৩০ বছর বয়সের বাইরে কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে একটি ধারা জুড়ে দেওয়া হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এটা একটা ভুল সিদ্ধান্ত। বিশ্ববিদ্যালয় একটি গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে জ্ঞান উৎপাদন ও বৃদ্ধির স্বার্থে এটা পরিবর্তন হওয়া উচিত।’