আদালত ভবনের লিফটে ওঠা মানে এক ভয়াবহ আতঙ্কের বিষয়। আদালত ভবনের অনেক লিফটেই নেই সেন্সর। নেই লিফট ম্যান, লিফটে থাকে না প্রয়োজনীয় বাটন। লিফটে ওঠা-নামার সময় বিকট শব্দ হয়। মাঝে মধ্যে লিফটের দরজা বন্ধ না হলে ম্যানুয়্যালি হাত দিয়ে তা লাগিয়ে দিতে হয়। আবার অনেক সময় লোকজন থাকা অবস্থাতেই লিফট বন্ধ হয়ে বাধে বিপত্তি। এমনই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে লিফট ব্যবহার করতে হয় সবাইকে।
ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির তারিকুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মূলত এখানে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পুরাতন দুইটি লিফটের সেন্সর নেই। এগুলোতে যেকোনও সময় বড় ধরনের সমস্যা হবে। মাসে অন্তত একবার হলেও লিফটগুলো সার্ভিসিং করা দরকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে লিফটগুলো গণপূর্ত থেকে লিজ নিয়ে দেখাশোনা করছেন মান বাংলাদেশ নামক এক প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান। গণপূর্তর উচিত কোর্টের বা বারের সভাপতি-সেক্রেটারি মাধ্যমে তদারকি করার জন্য প্রতিনিধি রাখা। তাহলে লিফটগুলো চলাচল উপযোগী থাকবে।’
লিফটের বিষয়ে জানতে চাইলে আইনজীবী মেহেদী হাছান পলাশ বলেন, ‘লিফটের এ অবস্থার মধ্য দিয়ে প্রতিদিন কোর্ট ভবনগুলোতে ওঠা-নামা করতে হয়। কর্তৃপক্ষ একটু সচেতন হলে অনেক মানুষ দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচে যাবে। নতুবা গত ৭ মার্চের মতো আবার বড় দুর্ঘটনায় আমাদের পড়তে হবে।’
উল্লেখ্য, গত ৭ মার্চ ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ছয়তলা ভবনের পাঁচতলা থেকে লিফট ছিঁড়ে আহত হয়েছেন ১২ জন। এর মধ্যে আটজন ঢাকা মেডিক্যালে, তিনজনকে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর একজন প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরেন। আহতদের মধ্যে ছয়জন আইনজীবী, একজন কোর্ট স্টাফ, লিফটম্যান ও বাকিরা বিচারপ্রার্থী বলে জানা যায়। ওই লিফটের ধারণক্ষমতা ছিল ৮ জনের। কিন্তু এতে ১২ জন লোক উটেছিলেন।
জজ কোর্টের লিফটগুলোর বেহাল অবস্থা সম্পর্কে ঢাকা মহানগরের পাবলিক প্রসিকিউটরই আব্দুল্লাহ আবু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। প্রত্যেকটি লিফটে অবশ্যই লিফটম্যান থাকতে হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আন্তরিক হতে হবে কর্মকর্তাদের। আন্তরিকতার অভাবের কারণে লিফটগুলো এভাবে চলছে। প্রতি মাসে নিয়মিত সার্ভিসিং করা হলে লিফটগুলো অনেক নিরাপদ হবে।’
আদালতের লিফটগুলোর দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা মান বাংলাদেশ সংস্থার কর্মকর্তা মশিউর রহমান মিলন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গণপূর্তকে আমরা অনেক আগেই সেন্সরের জন্য রিকুইজিশন দিয়েছি। কিন্তু তারা এখনও কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। অন্য দেখভালের কাজও করা হয়।’