সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে কমিটি হবে: মেয়র আতিকুল

ফুটওভার ব্রিজের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেন ডিএনসিসি মেয়র

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলাদা আলাদা কমিটি গঠন করা হবে। ওই কমিটি সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশ ও সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট  সবাইকে  সহযোগিতা করবে।

তিনি বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব এই কমিটি গঠনের কাজ শুরু করে দেবো। নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের সঙ্গে আমিও একমত। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা লাগবে। আমরা  একসঙ্গে মিলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কাজ করবো। ’

বুধবার (২০ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে ফুটওভার ব্রিজের  ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন শেষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘এখানে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করার কথা থাকলেও অনেক বাধা-বিপত্তির কারণে সেটি এতদিন করা সম্ভব হয়নি। যত বাধা-বিপত্তি আসুক, এই ক্রসিংয়ে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ হবে আমি কথা দিচ্ছি। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ যেসব পয়েন্টে ফুটওভার ব্রিজ এবং আন্ডারপাস নির্মাণ করার প্রয়োজন রয়েছে, সেসব স্থানে এগুলো নির্মাণ করা হবে। ডিএমপি এবং সিটি করপোরেশন আলোচনা করে এ কাজগুলো করবে।’

মেয়র বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের যে ১০টি দাবি রয়েছে, সেই দাবিগুলো আমার কাছে আছে। আমি দাবিগুলো সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গিয়ে আলোচনা করবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘সড়কে নির্দিষ্ট স্থান ব্যতীত কোনও বাস যদি থামানো হয়, তবে বাস মালিক ও চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। সুপ্রভাত পরিবহন বাস যে ঘটনা ঘটিয়েছে, সেটির যেন পুনরাবৃত্তি না হয়, সেজন্য বাস মালিকদের সঙ্গে আলোচনা  হয়েছে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি যেন সড়কে না চলে, সে বিষয়ে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা  হয়েছে। যদি ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলে তাহলে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।’ 

এসময় ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘সড়কে পাল্লা দিয়ে গাড়ি চলাচল করলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের দাবি যৌক্তিক। আর এই যৌক্তিক দাবির সঙ্গে আমরাও আছি। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা এক হয়ে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবো।’

তিনি শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে আমরাও কাজ করছি। আসুন আপনারা (শিক্ষার্থীরা) আমরা একত্রিত হয়ে এই কাজ করি। আমরা ট্রাফিক শৃঙ্খলা পক্ষ,ট্রাফিক সপ্তাহ কর্মসূচি করেছি।’

শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ট্রাফিক শৃঙ্খলা পক্ষের মাধ্যমে আমরা পুরোপুরি  সফলতা পাইনি সেটা সত্য। তবে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে শিক্ষার্থীদের সহযোগীতা প্রয়োজন। আসুন আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করি। আমরা আপনাদের সকল দাবিগুলো মেনে নিচ্ছি,সমর্থন করছি। আপনারা রাজপথ ছেড়ে ঘরে ফিরে যান।’  এসময় শিক্ষার্থীরা ভুয়া ভুয়া বলে শ্লোগান দিতে থাকে এবং বলতে থাকে ‘আর নয় আশ্বাস এবার চাই বাস্তবায়ন।’

ডিএমপি কমিশনার বলেন,‘সড়ক ও সেতুমন্ত্রী সুস্থ হয়ে ফিরলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে এবং সড়কের সার্বিক ব্যবস্থার বিষয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সুপ্রভাত কেন চলে জাবালে নুর কেন চলে?-শক্ষার্থীদের এই কথার প্রেক্ষিতে তিনি বলেন,‘আজ থেকে সুপ্রভাত কোথাও চলবে না। সুপ্রভাতের যে বাসটি দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে সেটির ঘাতক চালক ও হেলপারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিতে আমরা কাজ করছি। তাদের কোনও ছাড় দেয়া হবে না।

তিনি বলেন, ‘আগে সড়কে উল্টোপথে গাড়ি চলাচল করতো, আমরা ব্যবস্থা নিতে পারতাম না। কিন্তু শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরে আমরা সেটি করতে পেরেছি। আপনাদের দাবিগুলো গ্রহণ করেছি,এগুলো বাস্তায়নের জন্য আমাদের সময় দিন। আমাদের সহযোগিতা করুন। ’তবে ডিএমপি কমিশনার ও মেয়রের আশ্বাসের পরও শিক্ষার্থীরা রাজপথ ছাড়েনি। তারা তাদের আন্দোলন অব্যহত রেখেছে। এদিকে ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।