ওয়াসার এমডিকে শরবত খাওয়ানোর উদ্যোক্তাকে হুমকির অভিযোগ

পানি খাওয়ানোর উদ্যোক্তা মিজানুর (মাঝখানে)ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খানকে ওয়াসার পানি দিয়ে শরবত বানিয়ে খাওয়ানো কর্মসূচির উদ্যোক্তা রাজধানীর জুরাইনের বাসিন্দা মিজানুর রহমানকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকাল তিনটার দিকে ঢাকা ওয়াসার উপ-সহকারী প্রকৌশলী সৈয়দ নওয়াজ আলী তাকে হুমকি দেন বলে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকেও পোস্ট করেছেন তিনি।

মিজানুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) আমরা কর্মসূচি পালন করায় আজ আমার শ্বশুরবাড়িতে ওয়াসার উপ-সহকারী প্রকৌশলী সৈয়দ নওয়াজ আলী লোকজন নিয়ে গিয়ে হুমকি দেন। তিনি হাজি খোরশেদ আলী সরদার রোডে অবস্থিত আমার শ্বশুরবাড়ির লোকদের গালাগালির পাশাপাশি আমাকে দেখে নেওয়ার কথা বলেন।’
মিজানুর বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘একজন ওয়াসার কর্মকর্তা কীভাবে মাস্তানের মতো আচরণ করতে পারেন। তারা আমার শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার আগে আমার সঙ্গে অন্তত একবার কথা বলতে পারতেন।’
বিষয়টি সবাইকে জানাতে তিনি নিজ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট দেন। তাতে তিনি লিখেন, ‘ওয়াসার বড় কর্তার সুরে ছোট কর্তা বাসায় ঢুকে এক প্রকার হুমকির সঙ্গে বলছে আমরা নাটক করছি। -সৈয়দ নওয়াজ আলী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী।’

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন গণমাধ্যমের কাছে পানি সমস্যার সমাধান করেছে বলে দাবি করলেও আসলে কোনও সমাধান হয়নি।’

হুমকির বিষয়ে জানতে উপ-সহাকরী প্রকৌশলী সৈয়দ নওয়াজ আলীর সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। এছাড়া ওই মডসের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবিদ হোসাইনকে ফোন দিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ এপ্রিল ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) পক্ষ থেকে ‘ঢাকা ওয়াসা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে ওয়াসায় অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি উল্লেখ করে টিআইবি। এতে আরও বলা হয়, ঢাকা ওয়াসার পানির নিম্নমানের কারণে ৯৩ শতাংশ গ্রাহক বিভিন্ন পদ্ধতিতে পানি পানের উপযোগী করে। এরমধ্যে ৯১ শতাংশ গ্রাহকই পানি ফুটিয়ে বা সিদ্ধ করে পান করেন। গৃহস্থালি পর্যায়ে পানি ফুটিয়ে পানের উপযোগী করতে প্রতিবছর আনুমানিক ৩৩২ কোটি টাকার গ্যাসের অপচয় হয়।

তবে শনিবার (২০ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি’র প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান। তিনি দাবি করেন, ‘ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়, বিশুদ্ধ। একে ফুটিয়ে খাওয়ার প্রয়োজন হয় না।’ এছাড়া টিআইবি’র প্রতিবেদনকে তিনি নিম্নমানের বলেও উল্লেখ করেন।

ওয়াসা এমডি‘র এমন মন্তব্যের পর তাকে ওয়াসার পানি দিয়ে শরবত বানিয়ে খাওয়ানোর উদ্যোগ নেন জুরাইনের বাসিন্দা মিজানুর রহমান।