বিভিন্ন সংগঠনের ‘টিএসসি’ ব্যবহার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আপত্তি

ঢাবির টিএসসিবিভিন্ন বিভাগ ও সংগঠনের অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) ব্যবহার নিয়ে আপত্তি তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীরা। অ্যালামনাইয়ের অনুষ্ঠান, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সংগঠনের অনুষ্ঠান চলাকালে টিএসসিতে শিক্ষার্থীদের প্রবেশে বাঁধা দেওয়া হয় এমন অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

এ নিয়ে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আয়োজকদের কথা কাটাকাটি ও বাদানুবাদের ঘটনাও ঘটে। গত ২০ এপ্রিল ডাকসুর সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসিফ তালুকদারের সঙ্গেও অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তাদের বাক-বিতণ্ডার ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা এবং বিভিন্ন সংগঠনের পুনর্মিলনী বা অন্যান্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় টিএসসিতে। যেদিন অনুষ্ঠান চলে সেদিন কোনও শিক্ষার্থী টিএসসিতে প্রবেশ করতে পারেন না। এসব অনুষ্ঠানগুলোর আয়োজন করা হয় শুক্র ও শনিবারে। এই দুই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটি থাকে। অন্যান্য দিনের চেয়ে ছুটির দিনে টিএসসিতে শিক্ষার্থীরা বেশি আসেন। তবে অনুষ্ঠান থাকলে টিএসসির ভেতরে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় বাক-বিতণ্ডা ও অনভিপ্রেত ঘটনাও ঘটেছে।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা জানান, অনুষ্ঠান চলাকালে ভেতরে প্রবেশ করতে না দেওয়ায় তারা বেশ অসুবিধার সম্মুখীন হন। কারণ, টিএসসির আশপাশে ওয়াশরুম না থাকায় তারা ভেতরের ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। অনুষ্ঠান চলাকালে তারা এ সুযোগ পান না। এছাড়া সপ্তাহের ছুটির দিনগুলোতে টিএসসির খোলা মাঠেও তারা অবস্থান করতে পারেন না।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, পুরো টিএসসি ব্যবহার করে অনুষ্ঠান না করে শুধু প্রধান মিলনায়তন এবং ক্যাফেটেরিয়া ব্যবহার করে অনুষ্ঠান করলে এ ধরনের সমস্যা হতো না।

টিএসসির খোলা মাঠে অনুষ্ঠানের প্যান্ডেলটিএসসি সূত্রে জানা যায়, পুরো টিএসসি ব্যবহারে সর্বমোট ২৮ হাজার টাকা দিতে হয়। এর মধ্যে টিএসসির প্রধান মিলনায়তনের জন্য ভাড়া নেওয়া হয় পাঁচ হাজার টাকা। ক্যাফেটেরিয়া ব্যবহারের জন্য ভাড়া নেওয়া হয় তিন হাজার টাকা। আর মাঠ ব্যবহারের জন্য নেওয়া হয় ২৫ হাজার টাকা।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বেল্লাল হোসেন শিমুল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা সাবেকদের অনুষ্ঠানের বিপক্ষে না। তারা তো আমাদের অংশ। কিন্তু পুরো টিএসসি দখল করে অনুষ্ঠান কররে অন্য শিক্ষার্থীরা সেখানে প্রবেশ করতে পারেন না। আমাদের আড্ডাস্থল হলো টিএসসি। কিন্তু প্রায় ছুটির দিনেই তা বন্ধ থাকে। আয়োজকরা চাইলে টিএসসির অডিটোরিয়াম ব্যবহার করেও অনুষ্ঠান করতে পারেন। কিন্তু পুরো টিএসসি দখল করে অনুষ্ঠান করলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অসুবিধায় পড়েন।’

টিএসসি’র পরিচালক এ এম এম মহিউজ্জামান চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি সব সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে। আবার সাবেক শিক্ষার্থীদের বিপক্ষেও না। অনুষ্ঠান চলাকালে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ না করতে দেওয়ার বিপক্ষে আমি। কারণ, শিক্ষার্থীরা এখানে আসে আড্ডা দিতে। এ বিষয়ে আমি অ্যালামনাইয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাও বলেছি। কিন্তু তারা আমাকে বলেছেন, অনুষ্ঠান চলাকালে অন্য কেউ প্রবেশ করলে তারা অসুবিধার সম্মুখীন হবেন। তাই ওই সময়ে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। কিন্তু আমি মনে করি, তারা শুধু অডিটোরিয়াম এবং ক্যাফেটেরিয়া ব্যবহার করলে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা না। এতে শিক্ষার্থীদেরও সমস্যা কমবে।’