‘অবৈধভাবে ব্যাংক ঋণের সঙ্গে জড়িতদের আইনের মুখোমুখি হতে হবে’

দুদকযারা ব্যাংক থেকে অবৈধভাবে ঋণ নিয়েছেন এবং দিয়েছেন তাদের অবশ্যই আইনের মুখোমুখি হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতে জালিয়াতি, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না। সোমবার (১৩ মে) বিকালে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ২০১৮ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন ইকবাল মাহমুদের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধি দল। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন দুদক চেয়ারম্যান।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘ব্যাংকিং খাত নিয়ে দুদকের অবস্থান স্পষ্ট। ব্যাংক তার নিজস্ব বিধি-বিধান অনুসারে ব্যবসা পরিচালনা করবে। ব্যাংকিং নিয়ম-কানুন মেনে ব্যবসায়ীরা ঋণ নেবেন এবং ব্যাংকাররা ঋণ দেবেন। এতে দুদকের হস্তক্ষেপ করার কিছু নেই। তবে জালিয়াতি ও প্রতারণা করে ব্যাংকের অর্থ আত্মসাত করা হলে অব্যশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেবে দুদক।’ তিনি বলেন, যারা ব্যাংক থেকে অবৈধভাবে ঋণ নিয়েছেন বা ঋণ দিয়েছেন তাদের অবশ্যই আইনের মুখোমুখি হতে হবে।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদককে শূন্য সহিষ্ণুতার নীতি অনুসরণ করতে বলেছেন। তিনি শ্রেণিকক্ষে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে সম্ভাব্য যা করণীয় সবকিছু করতে পরামর্শ দিয়েছেন।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি নির্মূলে দুদককে পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড পেতে হলে স্বাস্থ্য এবং মানসম্মত শিক্ষার কোনও বিকল্প নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়ম যেন দুদকের নজর এড়িয়ে না যায় সেদিকেও দৃষ্টি রাখার পরামর্শ রাষ্ট্রপতি দিয়েছেন বলে জানান ইকবাল মাহমুদ।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, যারা সরকারি সম্পত্তিতে বিলাসবহুল রিসোর্ট বানিয়েছেন কিংবা দখলে রেখেছেন এসব সম্পত্তি অবশ্যই ফেরত দিতে হবে। জনগণের সম্পদ ফিরিয়ে দেওয়া না হলে কঠোর আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হবে। দুদক সরকারের তল্পিবাহক কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুদক কোনও সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়, এটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা। এ কারণে বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের কাছে দাখিল না করে রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেওয়া হয়। দুদক আইনে সরকার বা অন্য কোনও সংস্থার তল্পিবাহক হওয়ার সুযোগ নেই।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, দেশের ৮০ ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করেন। তারাই সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি, অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের শিকার হন। তৃণমূল পর্যায়ে ভূমি অফিস, পাসপোর্ট অফিস, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে মন্তব্য করেন দুদক চেয়ারম্যান। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন, দুদক কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক খান, এ এফ এম আমিনুল ইসলাম ও সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত।
প্রসঙ্গত, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৯ (১) ধারা অনুযায়ী, প্রতিবছর দুদকের আগের বছরের কার্যাবলীর বার্ষিক প্রতিবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে হস্তান্তরের বাধ্যবাধকতা আছে।

আরও পড়ুন: থানার ওসি হিসেবে বিসিএস পুলিশ ক্যাডারদের নিয়োগ চায় দুদক

               কাল রাষ্ট্রপতির কাছে বার্ষিক প্রতিবেদন হস্তান্তর করবে দুদক