জনপ্রতিনিধিরা সহযোগিতা করলে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ থাকবে না: ডিএমপি কমিশনার

ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াসন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনপ্রতিনিধিদের জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেছেন, ‘সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা প্রয়োজন।’ বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনের মিলনায়তনে ‘সহিংস উগ্রবাদ প্রতিরোধে জনপ্রতিনিধিদের করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মুক্ত একটি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে জনগণ যেভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করেছে সেভাবে জনপ্রতিনিধিরা যদি সহযোগিতা করেন তাহলে দেশে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ থাকবে না।’

তিনি বলেন, ‘হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনার পর ডিএমপিতে কোনও অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা ঘটেনি। এ কৃতিত্ব শুধু পুলিশের নয়, নগরবাসীরও। জঙ্গিবাদ দমনে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। জঙ্গিদের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার কোনও সুযোগ নেই। তবে এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, আমরা বিট পুলিশিংসহ প্রত্যেক থানাকে কেন্দ্র করে পুলিশিং কমিউনিটি ফোরাম গঠন করেছি। মাদক, ইভটিজিং, অজ্ঞানপার্টিসহ সব অপকর্ম প্রতিরোধে আমরা জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা চাই।

নগরবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনার সন্তান আবদ্ধ রুমে ইন্টারনেটে কী করছে সে বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ ইন্টারনেটে শান্তির ধর্ম অপব্যাখ্যা দিয়ে ধর্মের নামে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে কেউ কেউ। আর একে ঘিরেই সৃষ্টি হচ্ছে দ্বন্দ্ব-সংঘাত।

ডিএমপি কমিশনার দাবি করেন, ‘এবার ঈদে ছিনতাই কিংবা অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ার মতো ঘটনা তেমন ঘটেনি। এসব ঘটনা আগের চেয়ে অনেক কমেছে।’

অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে সারাবিশ্ব বাংলাদেশকে রোল মডেল হিসেবে অনুসরণ করে বলে মন্তব্য করেছেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান ও পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ দমনে দেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছে। একারণেই বাংলাদেশ জঙ্গিবাদ দমনে সফল হয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের উন্নত দেশ জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশকে অনুসরণ করে। আমরা সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছি। মসজিদের ঈমামদের সঙ্গেও কাজ করেছি। এখন জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করবো। জনপ্রতিনিধিদের সক্রিয় ভূমিকা থাকলে সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনগণ আরও সোচ্চার হবে।’

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছিলেন। দেশের জনগণ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। সেই ধারাবাহিকতায় দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জঙ্গিবাদ দমনে আমরা কাজ করছি। সফলতাও পেয়েছি।’
সিটিটিসির প্রধান বলেন, ‘হলি আর্টিজানের পর থেকে কিভাবে বাংলাদেশ জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ করেছে, সেটি জানতে বিশ্বের অনেক দেশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। বিভিন্ন সময় তাদের দেশে যাওয়ার জন্য আমাদেরকে দাওয়াত দিচ্ছে। আবার তারাও আমাদের দেশে এসে সফলতার বিষয় জানতে চাইছে। কারণ বাংলাদেশ জঙ্গিবাদ দমনে রোল মডেল হিসেবে বিশ্বব্যাপী আলোচিত।’