শাহবাগ থানায় আয়েশে আছেন ডিআইজি মিজান

ডিআইজি মিজানুর রহমানউচ্চ আদালতের নির্দেশে গ্রেফতারের পর থেকে শাহবাগ থানার ওসির কক্ষে অবস্থান করছেন সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ডিআইজি মিজানুর রহমান। সেখানে তার দেখভালের জন্য আছেন অন্তত পাঁচজন পুলিশ সদস্য। এছাড়া সার্বিক বিষয়টি তত্ত্বাবধান করছেন ওসি। থানার পুলিশ সদস্যদের বাইরে আরও একজন তার খোঁজ-খবর রাখছেন। তবে, তিনি নিজের নাম না বললেও, পরিচয় দিয়েছেন থানার স্টাফ হিসেবে।

সোমবার (১ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে মিজানুর রহমানকে গ্রেফতার করে শাহবাগ থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। ডিএমপি রমনা জোনের এডিসি আজিমুল হকের গাড়িতে করে তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে আসা হয়। পুলিশি পাহারায় গাড়ি থেকে নামিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় থানার ওসি আবুল হাসানের কক্ষে। এরপর থেকে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। ডিআইজি মিজান প্রবেশের পর থেকে কক্ষটি ভেতর থেকে লক করে দেওয়া হয়েছে। ভেতর থেকে অনুমতি সাপেক্ষে পুলিশ সদস্যদের প্রবেশ করতে হচ্ছে।

ওসির কক্ষে মিজানুর রহমান ছাড়াও আরও দুজন কর্মকর্তা রয়েছেন। দুজনই এসআই পদমর্যাদার। তাদের একজন পোশাকে ও অপরজন সাদা পোশাকে রয়েছেন। এই দুজনের বাইরে ওসির কক্ষে নিয়মিত আনাগোনা করছেন আরও দুজন এসআই।

নিজ কক্ষ ছেড়ে পাশের পরিদর্শকের (তদন্ত) কক্ষে বসে দাফতরিক কাজ সারছেন ওসি। থানায় ওসির কাছে আসা সাহায্য প্রার্থীরাও তার সঙ্গে দেখা করছেন ওই কক্ষে।

রাত ৮টার দিকে তার জন্য খাবার নিয়ে আসেন ওসির বডি গার্ড কামরুল। একই ব্যক্তি রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাইরে থেকে পুলিশের এই কর্মকর্তার জন্য ওষুধ নিয়ে আসেন। অতিরিক্ত কাপড় নিয়ে আসা হয় রাত ৯টা ১৫ মিনিটে। রাত ১১টায় তার খোঁজখবর নিতে থানায় আসেন ডিএমপির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। শাহবাগ থানায় ওসির কক্ষে ২০ মিনিট সময় কাটান তিনি। বাংলা ট্রিবিউনকে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সৌজন্যতার খাতিরে এসেছি। এর বেশি কিছু নয়।’

রাতের খাবারে কী দেওয়া হয়েছে তা সরাসরি বলতে রাজি হননি থানার কোনও কর্মকর্তা। তবে, ওসি আবুল হাসান বলেন, ‘রাতের খাবার বাইরে থেকে আনা হয়েছে।’

থানা সূত্র জানায়, অতিরিক্ত কাপড় নিয়ে আসার পর তিনি ড্রেস চেঞ্জ করেন। রাতে তিনি ওসির কক্ষে ভেতরে থাকা বিশ্রাম কক্ষে ঘুমাবেন।

প্রসঙ্গত, এর আগে নারী নির্যাতনের অভিযোগে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার হওয়া মিজানুর রহমানের অবৈধ সম্পদের তদন্ত শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কিন্তু, এই তদন্ত করতে গিয়ে দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এছাড়া ১৯ জুন আদালত এক আদেশে মিজানুর রহমানের স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং ব্যাংক হিসাবের লেনদেন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ২৪ জুন তিন কোটি ২৮ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

আরও খবর...
অবশেষে ডিআইজি মিজানকে গ্রেফতার করলো পুলিশ