বাঙালি সংস্কৃতির অনন্য শক্তি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিধর্মের ভিন্নতা ঐক্যের জন্য বাধা নয়, বরং সমৃদ্ধ জাতি গঠনের অনিবার্য উপাদান বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি। তিনি বলেন,  ‘হাজার বছরের প্রবাহমান বাঙালি সংস্কৃতির এক অনন্য শক্তি হলো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। এই ভূমিতে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম-খ্রিস্টান সবাই নিজেদের ভ্রাতৃত্বের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে গেছে বাঙালি জাতীয়তাবাদকে। আমাদের বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন, মহান ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটি পদক্ষেপে বাংলার হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম, খ্রিস্টান কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে বীর বিক্রমে লড়াই করেছে। ধর্মের ভিন্নতা ঐক্যের বাধা নয় বরং একটি সমৃদ্ধ জাতি গঠনের অনিবার্য উপাদান হয়ে উঠেছে।’

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ধামরাই উপজেলার শ্রীশ্রী যশোমাদবের রথযাত্রার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা স্বাধীনতার মাত্র এক বছরের মাথায় জনগণকে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান উপহার দেন। ধর্মনিরপেক্ষতা এই সংবিধানের অন্যতম মূলনীতি। তিনি সব ধর্মাবলম্বীর ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন। ধর্মের কারণে কোনও নাগরিক যাতে বৈষম্যের শিকার না হন, তা নিশ্চিত করেন। সবাই যাতে নিজ-নিজ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করতে পারেন, তা নিশ্চিত করেন। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। জাতির পিতা ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় নামে পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন করেন।’

মন্ত্রী আরও বলেন,  ‘রথযাত্রা হিন্দুদের অন্যতম পবিত্র একটি ধর্মোৎসব। এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয় চন্দ্র আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় তিথিতে। ধামরাইয়ের রথ অত্যন্ত প্রাচীন এবং উপমহাদেশে এই রথের খ্যাতি রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী বড় রথটি ১৯৭১ সালে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা পুড়িয়ে দেয়। পুড়িয়ে দেওয়া হলেও এর উৎসব-আয়োজন থেকে মানুষকে বিরত রাখা যায়নি।’

ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে দীপু মনি বলেন, ‘স্বাধীনতা-বিরোধী শক্তির মূলোৎপাটনের লক্ষ্যে গোটা বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে কাজ করতে হবে। জঙ্গি-সন্ত্রাসীদেরকে আইনের হাতে তুলে দিতে হবে। এসব জঞ্জালকে চিরবিদায় জানিয়ে দেশের আর্থ-সামজিক অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে হবে।’

মেজর জেনারেল (অব.) জীবন কানাই দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এরোমা দত্ত, স্থানীয় সংসদ সদস্য বেনজির আহমেদ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) ড. অরুনা বিশ্বাস।