সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের ফটকের পাশে তৈরি করা গার্ডরুমটিতে নাঈমা ফটোকপি অ্যান্ড স্টেশনারি নামে একটি দোকান রয়েছে। ২০০৫ সাল থেকে দোকানটি চালু রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গার্ডরুমটি ২০০১ সালে দোকান হিসেবে ব্যবহার করার অনুমোদন দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অনুমোদনপত্রে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী জাকারিয়া আহমেদের নামে দোকানটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে বর্তমানে দোকানটি পরিচালনা করছেন আলী আজম। জানা গেছে, তিনি ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) পরিচালক আলী আকবরের ভাই। গার্ডরুমটি দোকান হিসেবে ব্যবহার বাবদ কর্তৃপক্ষকে প্রথমে ২ হাজার পরে ৪ হাজার এবং বর্তমানে ৫ হাজার টাকা করে মাসিক ভাড়া দেওয়া হয় বলে দাবি করেছেন আলী অজম।
তবে ওই দোকানের মূল মালিকের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি তার বিষয়ে বিশেষ কিছু জানেন না বলে জানান। জানা গেছে, জাকারিয়া আহমেদ ও আলী আজম উভয়ের বাড়িই নেত্রকোনা জেলায়।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ওই ফটকে গার্ডরুম থাকলেও সেখানে কোনও নিরাপত্তাকর্মী নেই। এই সুযোগে কোনও ধরনের তল্লাশি ছাড়াই যে কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে পারেন। শিক্ষার্থীরা বলছেন, অনেক সময় দেখা যায় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে অনেক বহিরাগত এসে পড়াশোনা করছেন। যদি গেটে তল্লাশির ব্যবস্থা থাকতো তাহলে, বহিরাগত প্রবেশ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যেতো।
ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ‘নিরাপত্তাকর্মীর জন্য তৈরি করা কক্ষকে দোকান হিসেবে ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়। বিভিন্নজনকে সুবিধা দিতে শিক্ষকরা এ ধরনের কাজ করছেন, যা কোনোভাবেই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চরিত্র হতে পারে না। তাছাড়া নিরাপত্তাকর্মী না থাকায় শিক্ষার্থীদেরও সমস্যা হচ্ছে। আমরা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে কক্ষটি উদ্ধার করবো।’
যে স্থানে দোকানটি অবস্থিত তার দায়িত্ব লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্টের। এটা দেখভাল করার দায়িত্ব লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষের। জানতে চাইলে গ্রন্থাগারিক এবং তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক এসএম জাবেদ আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দোকানটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে, এটি কোনোভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূণ নয়।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘নিরাপত্তাকর্মীর জন্য তৈরি হওয়া কক্ষে কেন দোকান হবে? এটা তো ঠিক হয়নি। আমরা আগের চুক্তি বাতিল করে এসব দোকান সরিয়ে ফেলবো। ধীরে ধীরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ঠিক করবো।’