আদালতে জামিন আবেদনকারী মাসুদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আল ফয়সাল সিদ্দিকী। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এ সময় আদালত বলেন, আইন হওয়ার পর এতদিনেও ট্রাইব্যুনাল গঠনের গেজেট প্রকাশ না করায় জনমনে প্রশ্ন উঠতে পারে, মাদকের গডফাদারদের সঙ্গে সরকারের একটা মহলের সংযোগ রয়েছে। এক শিশু আইন সংশোধন করতে লেগেছে দুই-আড়াই বছর (হাইকোর্টের নির্দেশনার পর)। তারপরও আমরা আশায় (মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন অনুসারে ট্রাইব্যুনাল গঠন) রইলাম।
এরপর আদালত গেজেট প্রকাশের অগ্রগতির বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলকে জানাতে নির্দেশ দেন। আদালত বলেন, আগামী ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত এ মামলা মুলতবি রাখা হলো। আশা করছি আগামী ১৩ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেল এ বিষয়ে একটা ভালো খবর দেবেন। তবে এর আগেও গত ৮ জুলাই এই বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন না করায় আইন সচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিবকে লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর ইয়াবা ও হেরোইনসহ পুলিশের হাতে আটক হন মাসুদুল হক মাসুদ নামে এক ব্যক্তি। ওইদিন তাকে গ্রেফতারের পর বংশাল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় গত ২২ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এরপর নিম্ন আদালতে জামিন চান আসামি। কিন্তু জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে জামিন আবেদন (রিভিশন মামলা) করেন আসামি মাসুদ। কিন্তু ওই জামিন আবেদনের নথি পর্যালোচনাকালে হাইকোর্ট দেখতে পান, মাদক মামলাটি আমলে নিয়েছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত। আর বিচারের জন্য পাঠিয়েছেন ঢাকা মহানগর তৃতীয় যুগ্ম দায়রা জজ আদালতে।
কিন্তু মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৪৪(১) ধারায় বলা হয়েছে, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা প্রয়োজনীয় সংখ্যক মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করতে পারবে। (৪) উপ-ধারায় বলা হয়েছে, এই ধারার অধীন ট্রাইব্যুনাল স্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা সংশ্লিষ্ট জেলার যেকোনও অতিরিক্ত জেলা জজ বা দায়রা জজকে তার নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত ট্রাইব্যুনালের দায়িত্ব প্রদান করতে পারবে। কিন্তু এই আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে মামলাটি বিচারের জন্য তৃতীয় মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়।