ধর্ষণ বন্ধ ও বিচার দাবিতে সারাদেশে মানববন্ধন





পঞ্চগড়ে মানববন্ধননারী ও শিশু ধর্ষণ বন্ধ এবং ন্যায়বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) ১১৮টি সহযোগী সংগঠনসহ মানববন্ধন করেছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ )। এই কর্মসূচিতে অ্যাকশন এইড, উৎস বাংলাদেশ ও কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড তাদের ৫০টি সহযোগী সংগঠনসহ অংশ নেয়।


৬৪টি জেলার ২০০টি স্থানে একসঙ্গে এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশগুলোতে বক্তারা সম্প্রতি দেশে শিশু, নারী ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা শিশু ও নারীদের প্রতি চলমান সহিংসতা ও নির্যাতন প্রতিরোধে দ্রুত ও সঠিক বিচারের মাধ্যমে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, গত ছয় মাসে শুধু পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, শিশু ও নারী ধর্ষণের যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা ভয়াবহ। গত জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ৫৭২টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ২৩ শিশু ও আহত হয়েছে ৫২৪টি । নিহতদের মধ্যে তিনটি ছেলে এবং আহতদের মধ্যে ২২টি ছেলে শিশু রয়েছে। ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছিল ৮৪ শিশুর ওপর। এদের মধ্যে নিহত হয়েছে একটি শিশু। যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে ৭৫ শিশু।

অন্যদিকে, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে ৬৩০ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে ৩৭ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। সাতজন নারী আত্মহত্যা করেছেন। এছাড়াও ১০৫ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।
এমজেএফ এর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম পাড়ায় পাড়ায় শিশু সুরক্ষা কমিটি গঠন করে এই ধর্ষণ প্রতিরোধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘অভিভাবক, শিশু সংগঠন, মানবাধিকার সংস্থা, স্কুল-কলেজ এবং পাড়ার তরুণদের সম্মিলিতভাবে এই অপরাধ ঠেকাতে এগিয়ে আসতে হবে।’
সংগঠনগুলো মনে করে ধারাবাহিক বিচারহীনতা ও সঠিক সময়ে রায় না পাওয়ায় অপরাধীরা নির্বিঘ্নে বারবার একই ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে এবং অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে বলে অপরাধের মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। পাশাপাশি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা অসহনীয় পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। শিশু ধর্ষণের ঘটনায় শিশুর শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক জীবনে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। প্রতিদিন গণমাধ্যমে উঠে আসছে শিশু ও নারী ধর্ষণের এবং যৌন হয়রানির খবর। নারী ঘরে-বাইরে, স্কুলে-অফিসে, গণপরিবহনে, পার্কে, হাসপাতালে— কোথাও নিরাপদ নয়।
সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।