হাসপাতালে রেখে যাওয়া নবজাতককে এখনই নিতে চান না ‘মা’

ঢামেক হাসপাতালে সেই নবজাতক ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে রেখে যাওয়া নবজাতকের মা দাবিদার নাহার আক্তার নামে এক নারী শিশুটিকে দেখতে রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হাসপাতালে গেছেন। তবে পারিবারিক ঝামেলার কারণে এখনই তিনি নবজাতককে নিতে চান না বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালকের কাছে তিনি একটি আবেদন করেছেন। তবে বিষয়টি আইনিভাবে নিষ্পত্তির জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শাহবাগ থানা পুলিশকে খবর দিয়েছে। বর্তমানে ওই নারীকে শাহবাগ থানায় রাখা হয়েছে। তার পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে। তারা এলে তাদের হাতে নাহার আক্তারকে তুলে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে ঢামেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. নাছির উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নবজাতকের মা পরিচয়ে এক নারী এসেছেন। আমরা তার বক্তব্য শুনছি। তিনি একটি দরখাস্ত দিয়েছেন। তবে ওই নারী নবজাতকের মা কিনা তা এখনও নিশ্চিত না। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ওই নারী ঢামেক হাসপাতালে এসে জানান, নবজাতকটি তার। প্রথম স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়েছিল। দ্বিতীয় স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যাওয়ায় তিনি আবার প্রথম স্বামীর সঙ্গে বর্তমানে সংসার করছেন। নবজাতক দ্বিতীয় স্বামীর সংসারের। প্রথম স্বামী এই নবজাতক নিতে না চাওয়ায় তিনি তার সন্তানকে এখনই নিতে পারবেন না। তিনি এ সংক্রান্ত একটি আবেদন করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে । তার আবেদনের পর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ভোরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে জন্ম হয় নবজাতকটির। জন্মের পর তার বাবা-মা ঝগড়া করে পরের দিন শনিবার রাতে নবজাতককে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান। হাসপাতালের ভর্তি নিবন্ধন বইতে শিশুটির মায়ের নাম নাহার ও বাবার নাম রাসেল লেখা রয়েছে। তাদের বাসার ঠিকানা দেওয়া হয়েছে ঢাকার মিরপুর। একটি ফোন নম্বর দেওয়া হলেও সেটি ঘটনার পর থেকে বন্ধ। শিশুটির কাউকে হাসপাতালে না পাওয়ায় শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শাহবাগ থানার ডিউটি অফিসার বলেন, ‘ওই নারীর বর্তমান স্বামী এই নবজাতককে নিতে চাচ্ছেন না। তাই এই নারী তার নবজাতককে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেখে গেছেন। আজকে নবজাতককে দেখতে এসে প্রথমে তিনি নিতে চেয়েছিলেন। পরে আবার জানান, শিশুটিকে এখনই নেবেন না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের খবর দিলে আমরা ওই নারীকে শাহবাগ থানায় নিয়ে এসেছি। তাদের পরিবারের সবাইকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা আসছেন।’
তিনি বলেন, ‘নবজাতক কার কাছে থাকবে সে বিষয়ে সমাজসেবা অধিদফতর, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন। নবজাতকের মা দাবিদার নারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে লিখিত দিয়েছেন- তিনি এই সন্তান নেবেন না, দত্তক দেবেন।’
এদিকে পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ধারণা- এই নারীর কাছে নবজাতক দিলে তিনি বিক্রি অথবা কাউকে দিয়ে দিতে পারেন। হয়তো কাউকে দত্তক বা দিয়ে দেওয়ার জন্যই তিনি হাসপাতালে এসেছেন। নবজাতকটি বর্তমানে হাসপাতালেই রয়েছে।

আরও পড়ুন: সুস্থ আছে হাসপাতালে ফেলে যাওয়া নবজাতক ‘সারা’