বুয়েটে দলীয় রাজনীতি বন্ধ চান আন্দোলনকারীরা

১০ দফা দাবিতে বুয়েটে আন্দোলনকারীদের অবস্থান কর্মসূচিবুয়েটে আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে চলমান আন্দোলনে ১০ দফা দাবির মধ্যে একটি হলো ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা। এ দাবির বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা ছাত্র রাজনীতি বন্ধ চাই না। আমরা চাই সাংগঠনিক যে রাজনীতি সেটি বন্ধ হোক।’ গণমাধ্যমে বিভিন্ন টকশোতে যারা কথা বলছেন তারা যেন এই পার্থক্যের জায়গাটা বুঝে নেন সেটিও অনুরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
তারা বলেন, ‘বছরের পর বছর সাংগঠনিক রাজনীতির নামে জোর করে মিছিল-মিটিংয়ে নেওয়ার যে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে আমরা সেটি আর এগুতে দিতে চাই না।’
১০ দফার মধ্যে ষষ্ঠ দফায় আন্দোনকারীরা দাবি করেছেন, ‘বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক সংগঠনের ব্যানারে দীর্ঘদিন ধরে বুয়েটে হলে-হলে ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করে রাখা হয়েছে। মোস্ট জুনিয়র ব্যাচকে সবসময় ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে রাজনৈতিক মিছিল মিটিংয়ে যুক্ত করা হয়েছে। রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে যেকোনও সময় যেকোনও হল থেকে সাধারণ ছাত্রদের জোরপূর্বক হল থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে হলে-হলে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। রাজনৈতিক সংগঠনের এ ধরনের কর্মকাণ্ডে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ। তাই আগামী সাত দিনের (১৫ অক্টোবর) মধ্যে বুয়েটে সব রাজনৈতিক সংগঠন ও এর কার্যক্রম স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।’
উল্লেখ্য, আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে ১০ দফা দাবিতে টানা চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলন চলছে বুয়েটে। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) বুয়েট ক্যাম্পাসে শেরে বাংলা হলের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলের মধ্য দিয়ে চতুর্থ দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের দাবি, তাদের ১০ দফা মেনে না নেওয়া পর্যন্ত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
আবরারকে হত্যার পরদিন ৭ অক্টোবর সকাল থেকে আন্দোলনে নামেন বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। টানা চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলন চলছে। বুয়েটের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সারা দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও বিক্ষোভ প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে। শুধু শিক্ষার্থীরা নন, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে কর্মসূচি পালন করছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবকরা।
গত ৬ অক্টোবর রাতে আবরারকে হত্যার পরদিন ডিএমপির চকবাজার থানায় মামলা করেন তার বাবা মো. বরকত উল্লাহ। মামলাটির তদন্তভার পায় ডিবি দক্ষিণ বিভাগ। এ পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেফতার করে ডিবি দক্ষিণ বিভাগ।