মিরপুরে বেলুনের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৬ শিশু নিহত

নিহত এক শিশুর স্বজনের আহাজারিরাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে বেলুন ফোলানোর গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ছয় শিশু মারা গেছে। আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। বুধবার (৩০ অক্টোবর) বেলা ৩টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ১৪ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচ জনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

নিহত ছয় শিশু হলো ফারজানা (৭), নূপুর (১১), রুবেল (১০), রমজান (৮), শাহিন (৯) ও রিয়া মনি (১০)। এদের মধ্যে সন্ধ্যার পর সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিয়া মারা যায়। সবার লাশ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যালের মর্গে রাখা হয়েছে।

ফারজানার বাবার নাম আবু তালেব, মা নার্গিস বেগম। গ্রামের বাড়ি ভোলার বাপদার চেউয়াখালী। তার বোন মরিয়ম আহত হয়েছে। সে চিকিৎসাধীন। তারা পাঁচ বোন ও দুই ভাই। ফারজানা বস্তির ব্রাক স্কুলে পড়তো।

নূপুরের বাবার নাম নূর আলম, মা সুরমা বেগম। গ্রামের বাড়ি ভোলা জেলার দুলারহাটের নুরাবাদ।

রুবেলের বাবার নাম নূর ইসলাম, মা পারভীন বেগম। গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশনে।

রমজানের বাবার নাম বদিউল আলম। বাড়ি কিশোরগঞ্জের ফুলবাড়িতে। সে মাদ্রাসায় পড়তো।

শাহিনের (৯) বাবার নাম শাহজাহান। ঝিলপাড়া বস্তিতে পরিবারের সঙ্গে থাকতো সে।

রিয়া মনির বাবার নাম মো. মিলন। গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার আটপাড়া।

নিহত এই ছয় শিশুই পরিবারের সঙ্গে ঝিলপাড় বস্তিতে (ফজর আলী মাদবর বস্তি) থাকতো। তারা সবাই গরীব পরিবারের সন্তান। কারো বাবা রিকশাচালক, কারো মা গৃহপরিচারিকার কাজ করেন। তাদের দাফনের টাকাও পরিবারের হাতে নেই বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। অনেকে আবার সন্তানের লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যেতে চান। এজন্য তারা সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন।

সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে অবস্থানরত রূপনগর থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) মোকাম্মেল হক জানান, পাঁচজনের মরদেহ এসেছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।

এই হাসপাতালে আহত সাত জনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাদের মধ্যে তিনজনকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি চারজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আহত এক শিশুকে নিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে স্বজনেরাঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৪ জনের মধ্যে রয়েছে মিম (৮), সিয়াম (১১), মোস্তাকিন (৮), অজুফা (৭), তানিয়া (৭), জামিলা (৮), সোহেল (২৫), জুয়েল (২৯), জান্নাত (২৫), নেহা (৮), অর্ণব (১০), জনি (৯) ও মোরসালিনা (১০)। তাৎক্ষণিকভাবে বাকিদের নাম জানা যায়নি।

ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আবাসিক চিকিৎসক ডা. আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের এখানে ১৪ জন আহত অবস্থায় এসেছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু। এর মধ্যে ৪-৫ জনের অবস্থা গুরুতর। আমরা তাদের সব ধরনের চিকিৎসা দিচ্ছি।’

 

 

আরও পড়ুন: হঠাৎ বিস্ফোরণের পর কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় চারপাশ