আজ শনিবার (২ নভেম্বর) থেকে শুরু হয়েছে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা। শুক্রবার থেকেই ‘প্রশ্নফাঁস হয়েছে’ বলে ফেসবুকে গুজব রটেছে। ফেসবুকে খুঁজে কয়েকটি অ্যাকাউন্ট ও পেজের পোস্ট দেখে গুজবের সত্যতা মিলেছে। তবে পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর পোস্ট করা প্রশ্নের সঙ্গে মূল প্রশ্নের কোনও মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। গুজব ছড়ানো এ রকম কয়েকটা অ্যাকাউন্ট হচ্ছে, ‘সকল বোর্ড পরীক্ষার সিউর সাকসেস সাজেশন্স’, ‘Ahmed Sunny’, ‘Mahmud Hasan’, ‘Mahmud Raihan’, ‘ডিগ্রী অনার্স মাস্টার্স প্রশ্নপত্র এবং ১০০ শতাংশ কমন সাজেশন’, ‘Ahmed Shehzad’। এছাড়া পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই দুপুর ১২টার সময় বাংলা প্রশ্নের ছবি ‘HSC Board Exam Suggestion & Admission Exam Suggestion-2019’ নামের পেজ থেকে পোস্ট করা হয়।
তিনি বলেন, ‘কিছু অভিভাবক ও শিক্ষার্থী এতে শামিল হয়। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ, ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে হলেও এই প্রশ্নফাঁসের গুজব পরীক্ষার্থীকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। এমনিতেই পড়াশোনাসহ পরীক্ষার চিন্তা, সঙ্গে যুক্ত হয় গুজব। সবমিলিয়ে একজন শিক্ষার্থীর অবস্থা হয় অবর্ণনীয়। পড়াশোনা বাদ দিয়ে তারা প্রশ্ন সংগ্রহে মনোযোগী হয়ে পড়ে।’
তিনি জানান, গত কয়েক বছর ধরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সহায়তার লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একসঙ্গে কাজ করছে। কয়েক বছর ফেসবুকে মোবাইল নম্বরসহ বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রশ্ন দেওয়ার ফাঁদ পেতেছিল অসাধু চক্র। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ও সাইবার ক্রাইম ইউনিট এই চক্রের ১১৮ জনকে গত ৪ থেকে ৫ বছরে গ্রেফতার করে। তাদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তারা স্বীকার করেছে, শুধু টাকা রোজগারের জন্য এই জঘন্য কাজ তারা করেছে। এ ধরনের অপকর্মে যারা জড়িত হবে, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। পুলিশের কয়েকটি টিম তাদের গ্রেফতারে কাজ করছে।
শেখ নাজমুল আলম বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস ছাড়াই এখন প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বোর্ড ইতোমধ্যে বেশকিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। প্রশ্নফাঁস সংক্রান্ত যেকোনও তথ্য ও গুজব পুলিশকে জানানোর আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজবে কেউ কান দেবেন না। এখনও প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনও ঘটনা ঘটেনি। আশা করছি ঘটবেও না। তবে প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী প্রতারকচক্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সে ব্যাপারে নজরদারি করছে।’
এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, প্রশ্নফাঁস করা এখন আর সম্ভব নয়। অভিভাবকদের প্রতি আমাদের অনুরোধ, গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না। কোনও অবস্থায়ই প্রশ্নফাঁস সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘প্রশ্নফাঁস রোধে আমাদের ব্যবস্থাপনা আছে। আমরা সবসময় একই পদ্ধতি ব্যবহার করছি তা নয়। আমরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছি। যার ফলে প্রশ্নফাঁস করা যাবে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাদের কঠোর নজরদারি আছে।’
আরও পড়ুন: গুজব রটালে কঠোর ব্যবস্থা: শিক্ষামন্ত্রী