‘সাহিত্য কোনও প্রেসক্রিপশন দিয়ে হয় না’

ঢাকা লিট ফেস্টের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ অডিটোরিয়ামে ‘সমাজ ও সত্তা: দ্বান্দিক বিরোধ’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন কথাসাহ্যিতিক হরিশংকর জলদাস, শাহীন আক্তার, আনিসুল হক এবং মাসরুর আরেফিন।

SAZZ0889

এসময় হরিশংকর জলদাস বলেন, ‘প্যান্ট শার্ট পরা ভদ্রলোকদের হরিজনরা বিশ্বাস করে না। তারা মনে করেন তথাকথিত ভদ্রলোকেরা চালাকি করে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করে চলে যায়। এযন্য তাদের সাথে দীর্ঘদিন মেলামেশা করে ‘রামগোলাম’ উপন্যাসটা লিখেছি। তাদেরকে এই প্রতিশ্রুতি দিতে হয়েছে যে, আমি তোমাদেরই লোক। এটি লেখকের সঙ্গে ব্যক্তিসত্তার দ্বন্দ্ব। সমাজের এই দ্বন্দ্ব এবং বিরোধ লেখকদের বারবার উৎসাহিত করে।’
কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক বলেন, ‘একটা কথা আছে, লেখক চার কারণে লেখে। তার ইগো থেকে লেখক নিজেকে প্রকাশ করতে চায়। গুরুত্ব অর্জন করতে চায় এবং কেউ কেউ পৃথিবীর কল্যাণও করতে চায়।’ এক দার্শনিকের কোড দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের এবং জগতের সম্পর্ক- জলের ভেতর মাছের যে স্বাধীনতা, পুরো প্রকৃতি এবং পৃথিবীর সঙ্গে আমাদের সাথে সেই সম্পর্ক। এটার সাথে যোগ করে বলতে চাই, মাঝে মাঝে আমরা উঠে বাতাসটাও নিই, শুধু জলের মধ্যে বিচরণ সীমাবদ্ধ নয়। মানুষের বেদনাটা আমাদের সবার মনে নানাভাবে স্পর্শ করে এবং নানাভাবে এটা আমরা প্রকাশ করি।’
কথাসাহিত্যিক মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘সাহিত্য কোনও প্রেসক্রিপশন দিয়ে হয় না। লেখকের দ্বন্দ্ব প্রতি মুহূর্তে নিজের ভেতরে। লেখালেখির জায়গাটা একদমই একান্ত, মারমুখী জায়গা এটা না। লেখার টেবিলে সারা পৃথিবীর কোনও দ্বন্দ্ব হইচই থাকে না। ওটা থাকে মাথার ভেতরে।’ তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের পৃথিবীটাকে চিনি। লেখককে তার পৃথিবীটা ভালোভাবে চিনে ফেলতে হয়।  লেখক যাই বলতে চান না কেন, শেষে তাকে গল্প তাকে নির্মাণ করতে হয়। ভাবতে হয় যেন গল্পটা মানুষকে ধরে রাখতে পারে।’
শাহীন আক্তার বলেন, ‘গত শতাব্দীর অর্থাৎ চল্লিশের দশক যেটা মূলকেন্দ্র উপন্যাসের, সেটা ছিটেফোঁটা আমাদের কাছে এসেছে। আমার কাছে মনে হয়েছে, এখন সময় এসেছে আমাদের আরও পেছনে ফিরে দেখার।’