‘মঞ্চের জুটি, জীবনের জুটি’ আলো ছড়ালেন ঢাকা লিট ফেস্ট মঞ্চেও

SAZZ3862মুনীর চৌধুরীর ‘রক্তকরবী’ নাটকে কাজ করতে গিয়ে তাদের প্রথম পরিচয়। সেই পরিচয় প্রণয়ে গড়াতে সময় নেয়নি। এরপর বিয়ে। তবে বিয়ের পরও নাটকের প্রতি, মঞ্চের প্রতি ভালোবাসা এতটুকু ম্লান হয়নি তাদের, বরং উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। আর সে কারণেই বুঝি নাটক

ও সংসার—দুই জীবনেই অনুকরণীয় হয়ে উঠেছেন এই দম্পতি। তারা হলেন রামেন্দু মজুমদার ও ফেরদৌসী মজুমদার। সফল এই জুটি তাদের গল্প শোনালেন ঢাকা লিট ফেস্টে।
এই সাহিত্য উৎসবের নবম আসরের তৃতীয় দিন শনিবার (৯ নভেম্বর) বাংলা একাডেমির আবুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে ‘মঞ্চের জুটি, জীবনের জুটি’ শীর্ষক সেশনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের থিয়েটার জগতের এই দুই দিকপাল। সেশনটি সঞ্চালনা করেন নাট্যকার ও শিক্ষক আব্দুস সেলিম।
রামেন্দু মজুমদারসেশনের শুরুতেই ফেরদৌসী মজুমদারের কাছে সঞ্চালক তাদের বিয়ের আগের জীবনের কথা জানতে চান। ফেরদৌসী বলেন, ‘আমরা অনেক যুদ্ধ করে এতদূর আসতে পেরেছি। আমার বাবা ছিলেন খুবই রক্ষণশীল। ওই সময়ে আমাদের ভালোবাসার কথা জানানোর কোনও পরিস্থিতি ছিল না। কিন্তু আমি তার মতোই জেদি ছিলাম। আমার বাবা একসময় রাজি হয়ে যান আমাদের বিয়েতে। কিন্তু ’৭০ সালে এই বিয়ে প্রকাশ্যে হওয়া সম্ভব ছিল না। আমার দুই ভাই কবীর চৌধুরী ও মুনীর চৌধুরীর সাহায্যে এই বিয়ে সম্ভব হয়।’
কৌতুকছলে সঞ্চালক দুজনেরই কাছে জানতে চান, তাদের মধ্যে কে প্রথমে প্রেমের প্রস্তাব দেন?’ রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘ছেলেরা যেহেতু প্রথমে বলে, তাই আমিই ফেরদৌসীকে বলেছিলাম।’
ফেরদৌসী মজুমদারকথায় কথায় তারা জানান, মঞ্চে তাদের প্রথম একসঙ্গে কাজ ‘তামাশা’ নাটকে। টেলিভিশনে প্রথম কাজ ‘একতলা-দোতলা’ নাটকে। এই নাটক সম্পর্কে ফেরদৌসী মজুমদার বলেন, ‘তখন অনেক কুসংস্কার ছিল। বিয়ের আগে কোনও পুরুষকে স্পর্শ করা যাবে না। এই বিষয়গুলোও মানতে হতো।’
এই কথার পিঠে রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘আমরা দুজনই মুনীর চৌধুরী ও আবদুল্লাহ আল মামুনের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। তারা না থাকলে আমরা থিয়েটারে এতদূর আসতে পারতাম না।’
একসঙ্গে এত লম্বা জীবন অতিবাহিত করার রহস্য কী? এমন প্রশ্নের জবাবে রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘এখানে কোনও রহস্য নেই। আমাদের পারস্পরিক বিশ্বাস, শ্রদ্ধাবোধ ও বন্ধুত্বের কারণেই আমরা এতদূর আসতে পেরেছি।’
তরুণ অভিনয় শিল্পীদের জন্য পরামর্শ জানতে চাইলে ফেরদৌসী মজুমদার বলেন, ‘অভিনয়টা জীবন থেকেই শিখতে হয়।’ জীবনকে যত বেশি উপলব্ধি করবে, অভিনয়কে তত বেশি জানবে বলে মন্তব্য করেন গুণী এই অভিনয়শিল্পী।