নুসরাত হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামির আপিল হাইকোর্টে





নুসরাত হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামিফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামি খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল (জেল আপিল) করেছেন।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ফেনী জেলা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসব আপিলের নথি এসে পৌঁছায়। এদিকে, এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামির ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য) হাইকোর্টে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার ব্যারিস্টার সাইফুর রহমান।
আইনি বিধি-বিধান অনুসারে বিচারিক আদালতে কোনও আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হলে তা কার্যকরের জন্য হাইকোর্টের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। যার ধারাবাহিকতায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্সের ওপরে হাইকোর্টে শুনানি শেষে রায় ঘোষণা করা হয়। এছাড়াও দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা জেলে থাকাকালে খালাস চেয়ে পৃথক আপিল দায়েরের সুযোগ পেয়ে থাকেন, এটি জেল আপিল নামেই পরিচিত।
এর আগে গত ২৪ অক্টোবর নুসরাত হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ।
ওই রায়ে ১৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। আসামির হলো—সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা (৫৭), নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), কাউন্সিলর ও সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম ওরফে মোকসুদ কাউন্সিলর (৫০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন (১৯), আব্দুল কাদের (২৫), আবছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মনি (১৯), উম্মে সুলতানা ওরফে পপি (১৯), আব্দুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন ওরফে মামুন (২২), সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাদ্রাসার সাবেক সহ-সভাপতি রুহুল আমিন (৫৫), মহিউদ্দিন শাকিল (২০) ও মোহাম্মদ শামীম (২০)।
প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে রাফির গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। এর আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা প্রত্যাহারের জন্য রাফিকে চাপ দেয় তারা।
পরে আগুনে ঝলসে যাওয়া রাফিকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে নুসরাত জাহান রাফি মারা যান।