রাজধানীর মগবাজারে একটি হোটেলে অবস্থানকালে এক সৌদিপ্রবাসীসহ একই পরিবারের তিন সদস্যের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিকভাবে ধারণা, খাবারে বিষক্রিয়ার কারণেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার (২৯ জুন) সকালে রাজধানীর মগবাজারে অবস্থিত ‘সুইট স্লিপ হোটেল’-এ ঘটনা ঘটে। পরে তাদের উদ্ধার করে দ্রুত আদ্-দ্বীন হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত্যুর ঘোষণা করেন। এ তথ্য নিশ্চিত করে রমনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জালাল উদ্দিন।
নিহতরা হলেন—লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রামের সৌদিপ্রবাসী মনির হোসেন (৪৫), তার স্ত্রী স্বপ্না আক্তার (৩৫) ও তাদের ছেলে নাঈম হোসেন আরাফাত (১৪); যিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী ছিলেন।
এসআই জালাল উদ্দিন জানান, পরিবারটি শনিবার (২৮ জুন) লক্ষ্মীপুর থেকে ঢাকায় আসে ছেলে নাঈমের চিকিৎসার জন্য। সন্ধ্যায় আদ্-দ্বীন হাসপাতালে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারা মগবাজারের ‘সুইট স্লিপ’ হোটেলে অবস্থান করছিলেন। কেয়ারটেকারসহ পরিবারের সদস্যরা হোটেলেই ছিলেন এবং পাশের একটি স্থানীয় খাবার দোকান থেকে ‘ভর্তা-ভাত’ জাতীয় খাবার নিয়ে এসে রাতের খাবার খেয়েছিলেন।
তিনি বলেন, পরে রবিবার (২৯ জুন) সকাল ১১টার দিকে হঠাৎ পরিবারের সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। বমি শুরু হয়। কেয়ারটেকার প্রথমে নাঈমকে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে মনির হোসেন ও স্বপ্নাকে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা একে একে তিনজনকেই মৃত ঘোষণা করেন। পরে তাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, ‘স্বপ্না আক্তার ও নাঈম হোসেন হোটেলের রুমেই মারা যান। মনির হোসেনকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়। আমাদের ধারণা, খাদ্যে বিষক্রিয়া ঘটেছে। তবে বিষয়টি আমরা নিশ্চিত হতে পারবো ময়নাতদন্তের পর।’
ডিসি মাসুদ বলেন, ‘রবিবার সকালে মনির হোসেন তার এক আত্মীয়কে ফোন করে জানান, তারা তিনজনই বমি করছেন এবং শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল বোধ করছেন। আত্মীয়রা হোটেলে এসে পুলিশে খবর দেন। এরপরই তিনজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।’
এখনও নিশ্চিত নয় যে এটি শুধুই একটি দুর্ঘটনা, নাকি এর পেছনে রয়েছে পরিকল্পিত কোনও বিষক্রিয়া? পুলিশ বলছে, হোটেল থেকে আনা খাবার থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি কেয়ারটেকারের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।