বেশি খাদ্য অপচয় হয় বিয়ের অনুষ্ঠানে


২১সবচেয়ে বেশি খাদ্য বিয়ের অনুষ্ঠানে অপচয় হয় বলে সম্প্রতি এক গবেষণায় তথ্য উঠে এসেছে। অ্যাকশন-এইড এবং ম্যাকম এর যৌথ উদ্যোগে গবেষণাটি পরিচালিত হয়। এই গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি মানুষের মত দিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) ঢাকার গুলশানের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করে অ্যাকশন-এইড বাংলাদেশ। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।
জানানো হয়, অতিরিক্ত খাদ্যগ্রহণের ফলে নানাধরণের স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন- গ্যাস্ট্রিক, স্থুলতা, খাদ্যে বিষক্রিয়া, উচ্চরক্তচাপ প্রভৃতিতে ভোগেন ঢাকার অধিকাংশ মানুষ, তারপরও বাইরে খাবার খাওয়া শহুরে অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
গবেষণাপত্র উপস্থাপনকালে ম্যাকম-এর সহকারী ব্যবস্থাপক শারমিন হেলাল বলেন, ‘২৫ থেকে ৩০-ঊর্ধ্ব মানুষের মধ্যে ৫৭ শতাংশ তাদের বেঁচে যাওয়া অতিরিক্ত খাবার পরবর্তীতে খাওয়ার জন্য রেখে দেন, ৩০ শতাংশ অন্যদের দিয়ে দেন এবং ৭ শতাংশ ফেলে দেন বলে এই জরিপে জানা গেছে। খাদ্য অপচয়ের ক্ষেত্রে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সসীমার ৫২ শতাংশ এবং ২৫ থেকে ৩০-ঊর্ধ্ব বয়সসীমার ৫৭ শতাংশ মনে করেন- বিয়ের অনুষ্ঠানে সবচেয়ে বেশি খাবার অপচয় হয়।’
ম্যাকম-এর সহকারী ব্যবস্থাপক শারমিন হেলাল বলেন, ‘গবেষণা পরিচালনার সময় দেখা যায় ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সসীমার মধ্যে ৯১ শতাংশ অংশগ্রহণকারীর বাইরে খাওয়ার প্রবণতা বেশি।’
গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপনা শেষে আলোচনায় অংশ নেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. এস এম মঞ্জুরুল হান্নান খান। তিনি বলেন, ‘খাবার অপচয়ের ক্ষেত্রে পারিবারিক শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ, যা বর্তমানে কমে যাচ্ছে। রেস্টুরেন্টগুলোর আকর্ষণীয় অফার ও বিভিন্ন দিবসের বাণিজ্যিকীকরণের ফলে বাইরে খাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। অপরদিকে প্যাকেজিং-এ প্রচুর প্লাস্টিক ব্যবহার হচ্ছে, যা পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরুপ। বিভিন্ন গবেষণা মতে, আমরা যে পরিমাণ প্লাস্টিক উৎপাদন করছি তাতে ২০৫০ সালে সমুদ্রে মাছের থেকে প্লাস্টিক বেশি থাকবে।’
অ্যাকশন-এইড বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, ‘বাংলাদেশের শ্রেণিভেদে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে। কিন্তু কেনাকাটার ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। অপরদিকে বাইরে খাওয়াটা বিনোদন ও বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে আড্ডায় পরিণত হচ্ছে। কোনও সহজলভ্য বিকল্প জায়গা না পেয়ে বর্তমান তরুণরা রেস্টুরেন্টমুখী হচ্ছেন।’
জানানো হয়, ঢাকার ৫টি এলাকা- উত্তরা, গুলশান-বনানী-বারিধারা, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি এবং পুরান ঢাকার ১৫০০ মানুষের ওপর এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়।