‘এ কোন যুগে এলাম!’

২১২১২১

শান্তা আক্তার একজন গৃহিণী। খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম বেশি মনে করে কিছুটা কম দামে কিনতে পাইকারি বাজারে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানেও বিধি বাম। দেশি পেঁয়াজের কেজি ১৬০ টাকা শুনেই বললেন ‘এ কোন যুগে এলাম!’।   

পেঁয়াজের ঝাঁজ সামলাতে পারছেন না সাধারণ মানুষ। বাজারে দেশি পেঁয়াজের পাইকারি দামই এখন সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা। অন্যান্য দেশের আমদানি করা পেঁয়াজও কোনটা ১০০ টাকার নিচে নেই। তাই হতাশ হচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর কাওরানবাজার ঘুরে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পাইকারি বিক্রেতারা দোকানে পেঁয়াজের মূল্য টাঙিয়ে রেখেছেন। পাবনার সাঁথিয়ার পেঁয়াজ ১৫০ টাকা কেজি, দেশি পেঁয়াজ ১৬০ টাকা, মিশরের পেঁয়াজ ১২২ টাকা, বার্মার পেঁয়াজ ১৩০ টাকা। এছাড়া চীনের পেঁয়াজের কেজি ১২৪ টাকা। 

কাওরানবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী গিয়াস বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই দামের নিচে পেঁয়াজ না পেলে আনবো কোথা থেকে? সরাসরি পাবনা থেকে পেঁয়াজ আনি, তারপরও তো কমে আনতে পারি না।’

অন্যদিকে কুতুবপুর বাণিজ্যালয়ের বিক্রেতা রহমত জানান, শ্যামবাজার থেকে নিয়ে আসেন তিনি। দাম বেশি। আর দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কম। কারও কাছে পেঁয়াজ মজুদ নাই তেমন। তাই দাম বেশি।

এদিকে পেঁয়াজ কিনতে এসে হতাশা প্রকাশ করেছে ক্রেতারা। তাদের ভাষ্য, পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না বরং নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।

কাওরানবাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা জাফর আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পেঁয়াজ নিয়ে যা শুরু হয়েছে তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে আমি মনে করি। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নাগালের বাইরে হলে মানুষ চলবে কীভাবে? গতকাল মন্ত্রী বললেন- পেঁয়াজের দাম নাকি নিয়ন্ত্রণে। কই? ১৫০ টাকা ১৬০ টাকায় নিয়ন্ত্রণ? এটা কী দাম পেঁয়াজের? ৩০ টাকার পেঁয়াজ আজ ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, এর পেছনে কে দায়ী, সরকারের তা খুঁজে বের করা দরকার।’

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, গত বছর এই সময়ে পেঁয়াজের কেজি ৪০ টাকার মধ্যে ছিল। এখন ১২৫ থেকে ১৪৫ টাকা। দেশি পেঁয়াজের মূল্য বেড়েছে প্রায় ৮৭ ভাগ বেড়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর এর উপ-পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চাহিদার সঙ্গে সরবরাহের একটি পার্থক্য বাজারে আছে। পেঁয়াজের বড় চালান আসছে। ৭-৮ দিনের মধ্যে পেঁয়াজের দাম সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে বলে আশা করি।’