হাসপাতালে অবহেলায় প্রসূতি ও সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ

আদ্-দ্বীন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (ছবি সংগৃহীত)রাজধানীর আদ্-দ্বীন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও ম্যানেজমেন্টের অবহেলায় (নবজাতক) সন্তানসহ প্রসূতি নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মৃতের নাম আসমা বেগম (৩০)। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে। স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে রমনা থানার পুলিশ ওই হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছেন।

আসমা বরিশাল জেলার হিজলা উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের আরিফ হোসেনের স্ত্রী। তার বাবার নাম মাওলানা শাহ্ আলম ও মা ফিরোজা বেগম।

রমনা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জানান, ভোরে আদ্-দ্বীন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ থেকে আসমা বেগম ও তার সন্তানের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। স্বজনরা মৃত্যুর জন্য হাসপাতালের চিকিৎসক নার্স, ম্যানেজমেন্টের অবহেলার কথা বলেছেন।

আসমার পরিবারের বরাত দিয়ে খালা ফেরদৌসী আক্তার লিপি জানান, গত ১৭ নভেম্বর ঢাকার আদ্-দ্বীন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানিয়েছেন, তার (আসমা) পেটে পানির পরিমাণ বেশি, বাচ্চার অবস্থাও বেশি ভালো না। সিজার বা নরমাল ডেলিভারিতে সন্তানের মৃত্যু হতে পারে। সিজারে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও আপত্তি নেই জানানো হয়। মাকে বাঁচানোর জন্য যা-ই হোক করার জন্যও বলা হয়।

কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, নরমাল ডেলিভারি হবে। তারা সোমবার রাতে চার ব্যাগ রক্তের কথা বলেন। আমরা তাও যোগাড় করে দিয়েছি। পরে আসমাকে ওটিতে নিয়ে যান নার্সরা। তখনো কোনও চিকিৎসক আসেননি। পরে চিকিৎসক আসেন, নরমাল ডেলিভারিতে মৃত সন্তান প্রসব হয়। আর ডেলিভারির সময়ই আসমার মৃত্যু হয়।

তিনি বলেন, আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, চিকিৎসক ও নার্সদের (সে সময় সেখানে যারা উপস্থিত ছিলেন) বিরুদ্ধে মামলা করবো।

তবে আদ্-দ্বীন ফাউন্ডেশনের ডেপুটি মহা-ব্যবস্থাপক (এডমিন) তারিকুল ইসলাম মুকুল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আসমাকে খুব খারাপ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। ভর্তির সময় পেটে থাকা বাচ্চার হার্টবিটও ছিল না। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি তাকে বাঁচানোর জন্য। আর সব সময়ই চিকিৎসক ছিল। বরং রোগী মারা যাওয়ার পর তাদের লোকজন আমাদের লোকজনদেরকে মারধর করেছে। পরে পুলিশ এসেছে, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নিয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু অভিযোগ উঠেছে, সে জন্য হাসপাতালের পক্ষ থেকে অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।