ছিটমহলগুলো যুক্ত হওয়া উপলক্ষে শুক্রবার মধ্যরাতে মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল মধ্য মশালডাঙায় ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে। বেলুন দিয়ে বানানো হয়েছে তোরণ। মশালডাঙায় সড়কের দুইধারে ভারতের পতাকা, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, শেখ হাসিনা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছিল। এছাড়াও ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ইন্দিরা গান্ধীর ছবি।
মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ছিটমহল আন্দোলনের জনক প্রয়াত দীপক সেনগুপ্তের স্ত্রী সুনন্দা সেনগুপ্ত, বিনিময় কমিটির শীর্ষ নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত, বাংলাদেশ থেকে আসা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্রহাম লিঙ্কন, বিনিময় কমিটির আইনি উপদেষ্টা আহসান হাবিব, ছিটমহলের প্রবীন বাসীন্দা আজগর আলী, মনসুর আলী,স্থানীয় বিধায়ক ও তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, বিধায়ক উদয়ন গুহ প্রমুখ।
এদিনের মূল মঞ্চটি করা হয়েছিল ভারতের প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালামকে শ্রদ্ধা জানিয়ে। মঞ্চে ছিল ছিটমহল আন্দোলনের জনক দীপক সেনগুপ্তর প্রতিকৃতি। রাত ৮টায় শুরু হয় মঞ্চের অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে ছিটমহলবাসীদের এতো দিনের মানবেতর জীবন নিয়ে একটি আলেখ্য পরিবেশিত হয়। মঞ্চে হাজির করা হয় ছোট্ট শিশু জেহাদের ভারতীয় হয়ে ওঠার লড়াই, তুলে ধরা হয় ভারতীয় জেলে বন্দি ছিটমহলবাসীর যন্ত্রণা,ফেসবুক আর স্যোশাল মিডিয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যাপী আন্দোলনকে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা। ৯টা ৫০ মিনিটে ছিটমহল নিয়ে একটি প্রামান্য চিত্র প্রর্দশিত হয়।
ঠিক রাত ১২টায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে ভারতের পতাকা তোলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ওড়ানো হয় ফানুস। এরপর ৬৮টি মোমবাতি জ্বালিয়ে ৬৮টি বছরের ইতিহাসকে স্মরণ করেন তারা। সেখানে উপস্থিত ছিটমহলবাসীর অনেকের চোখই তখন জলে ভিজে উঠল।
রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘বিনিময় সম্পন্ন হল। এবার দ্রুততার সাথে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আমরা উন্নয়নের কাজ শুরু করব।‘ বাংলাদেশে সুপ্রিম কোর্টেও আইনজীবী আব্রাহাম লিঙ্কন বলেন, ‘ভৌগোলিক বিনিময় হল। এবার অর্থনৈতিক অধিকার আর সামাজিক অধিকারের জন্য অর্জনের জন্য লড়াই। তাহলেই প্রকৃত উন্নয়ন হবে।‘
ভারতে অভ্যন্তরে ৫১টি ছিটমহলেই ছিল উৎসবের মেজাজ। করলা, জোংরা, ফলনা, পোয়াতুরকুঠি, মশালডাঙা, বাত্রিগাছ, শিবপ্রসাদ মুস্তাফিসহ প্রতিটি ছিটেই এই সময় পতাকা উত্তোলন করা হয়। হয় মশাল মিছিল।
/এফএস/