সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক আইনুন নাহার বলেন, কর্মক্ষেত্রে যে কোনও ধরনের যৌন হয়রানি প্রতিকূল অবস্থার সৃষ্টি করে, যা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি প্রতিবন্ধকতা। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি যৌন হয়রানি মুক্ত কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য একটি রিট পিটিশন দায়ের করে। সে সময় বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ কর্মক্ষেত্রে ব্যাপক যৌন হয়রানিমূলক ঘটনা ও তা প্রকাশ হতে থাকে। যার ফলে ২০০৯ সালের ১৪ মে হাইকোর্ট কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ১১টি সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেন। রায়ে নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে, ‘কোর্টের এই আদেশ ও নির্দেশনাগুলো পার্লামেন্ট কর্তৃক এ সংক্রান্ত পর্যাপ্ত ও কার্যকর আইন প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত অনুসৃত ও পরিপালিত হবে’।
তিনি বলেন, কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে দেখা গেছে, একদিকে যেমন হাইকোর্টের নির্দেশ মতো কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কোনও আইন পাস হয়নি। আবার অন্যদিকে কোর্ট যে ১১ টি নির্দেশনা দিয়েছেন, সেগুলোও কোনও প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়নি। তাই বিভিন্ন সমমনা বেসরকারি সংস্থা, শ্রমিক ও ম্যানেজমেন্ট, ভিকটিম, ট্রেড ইউনিয়ন, আইনজীবী, নারী সংসদ সদস্য ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে এই স্বাক্ষর গ্রহণ কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সংবাদ সম্মেলন থেকে সরকারের প্রতি ৪ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো হাইকোর্টের নির্দেশনা ২০০৯ অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন প্রণয়ন দ্রুত করা, আইন প্রণয়নের আগ পর্যন্ত হাইকোর্টের নীতিমালা অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কমিটি গঠন সংক্রান্ত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা, সরকার আইএলও কনভেনশন-১৯০ কে সমর্থন করা এবং কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সকল পর্যায়ে অধিকতর জনসমর্থন আদায়ের জন্য দেশব্যাপী ‘স্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচি’ সফল করা।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়াজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাজমা আক্তার, ইন্ডাস্ট্রি অল বাংলাদেশ কাউন্সিল সভাপতি রুহুল আমিন, কর্মজীবী নারী’র পরিচালক রাহেলা রাব্বানী, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) পরিচালক নাজমা ইয়াসমিন, ফেয়ার ওয়্যার ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টটিভ বাবলুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।