‘অজয় রায়দের শূন্যতা নতুন প্রজন্ম পূরণ করলে তাদের যাওয়াটা সার্থক হবে’

111পদার্থ বিজ্ঞানী ও মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. অজয় রায়ের মৃত্যুতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে নতুন প্রজন্ম তা পূরণ করতে পারলে তাদের চলে যাওয়াটা সার্থক হবে বলে মন্তব্য করেছেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিকালে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে অধ্যাপক অজয় রায় স্মরণে আয়োজিত শোকসভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। গণজাগরণ মঞ্চ এ শোকসভার আয়োজন করে।


ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে প্রগতিশীল আন্দোলন পর্যন্ত অজয় রায়ের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, “ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে যতগুলো প্রগতিশীল আন্দোলন হয়েছে সবগুলোতে অধ্যাপক অজয় রায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি সন্তানের মৃত্যুতে নিজেই বলেছেন, ‘আমি আমার সন্তানের জন্য গর্বিত। কারণ, সে নিষ্ঠতার জন্য শহীদ হয়েছে।’ এরপরও তিনি অসুস্থ শরীর নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে যতগুলো সংগ্রাম হয়েছে সেগুলোতে অংশগ্রহণ করেছেন।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. কাবেরী গায়েন বলেন, ‘অধ্যাপক অজয় রায় তার স্ত্রীকে রেখে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন। আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক শহীদ বুদ্ধিজীবী আছেন। কিন্তু আমি যদি হিসাব কষতে যাই, তাহলে দেখবো মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে গিয়ে যুদ্ধ করার মতো শিক্ষক আমাদের দেশে খুব বেশি নেই। অজয় রায় যুদ্ধ করে আসা একজন মানুষ। এমন একজন মানুষের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে যে আয়োজনটি হওয়া উচিত ছিল, আমার মনে হয় সেটি হয়নি।’
অধ্যাপক অজয় রায়ের ছেলে অনুজিৎ রায় বলেন, ‘একটি পরিবারে বাবা হচ্ছেন বটবৃক্ষ, যিনি ছায়ার মতো থাকেন। এখন সবচেয়ে বড় বটবৃক্ষের ছায়াটি আমাদের পরিবার থেকে চলে গেছে। তবে আমি তার ছেলে হিসেবে নয়, দেশের একজন নাগরিক হিসেবে বলতে চাই, তার মৃত্যুতে দেশ একটি অমূল্য মেধাকে হারালো। জানি না, সেটি এই জাতির আজও বোধগম্য হবে কিনা। আমার বাবা তার কর্মের মাধ্যমে বেঁচে থাকবেন।’
শোকসভার শুরুতে অজয় রায়ের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক খান আসাদুজ্জামানের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক চম্পা বসু, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেতা আল কাদেরী জয়, প্রকাশক রবিন আহসান, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সহ-সাধারণ সম্পাদক সংগীতা ইমাম, ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মানবেন্দ্র দেব প্রমুখ। গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক আকরামুল হক এতে সভাপতিত্বে করেন।