বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাব তিনি এসব কথা বলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন নিম্ন আদালত। তার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া হাইকোর্টে আপিল ফাইল করেছেন। সে আপিলে তিনি জামিন চেয়েছিলেন। হাইকোর্ট বিভাগ সে জামিন আবেদন নাকচ করেছেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার পক্ষে একটি লিভ পিটিশন দায়ের করা হয়। আবেদনে তিনি জামিন চেয়েছিলেন। আদালত তার আইনজীবী, রাষ্ট্রপক্ষ এবং দুদক আইনজীবীদের কথা শুনে আজ জামিন আবেদন ডিসমিস (খারিজ) করেছেন।
তবে খালেদা জিয়া যদি রাজি থাকেন, সে ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকদের তাকে উন্নত চিকিৎসার দেওয়ার জন্য আদালত নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।
রাষ্ট্রের প্রধান এই আইন কর্মকর্তা আরও বলেন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন আদালতে আগেও দাখিল করা হয়েছে। গতকাল যে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে তার সঙ্গে তুলনা করলে বড় কোনও পার্থক্য দেখা যায়নি। তার শারীরিক অবস্থার বিশেষ কোনও অবনতি হয়নি। যে রকম ছিল, সে রকমই আছে।
সর্বশেষ রিপোর্টে কী বলা আছে জানতে চাইলে মাহবুবে আলম বলেন, তার দুটো হাঁটুতে রিপ্লেসমেন্ট করা হয়েছে। একটা ১৯৯০ সালে, আরেকটি ২০০২ সালে। এটা ভালো হওয়ার মতো অবস্থায় নেই। স্বাভাবিকভাবে এতদিন পরে রিপ্লেসমেন্টের কার্যকারিতা থাকে না। সেক্ষেত্রে এটির অ্যাডভান্স (উন্নত) চিকিৎসা নিতে হয়। কতগুলো বিশেষ ধরনের ইনজেকশন আছে, সেই ইনজেকশন দেওয়ার বিষয়ে তার অনুমতি (সম্মতি) না পাওয়া গেলে তা দেওয়া যাবে না। তিনি (খালেদা জিয়া) অনুমতি দিচ্ছেন না। আদালত বলেছেন, তিনি যদি অনুমতি দেন, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সে ব্যবস্থা নেবে। সর্বসম্মতিক্রমেই আজকে আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
তবে আজ আদালতে পেশ করা খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন তার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। তবে এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমি তিনটি প্রতিবেদন আদালতে পেশ করেছি। একটা ২০১৮ সালের, একটা ২০১৯ সালের আর একটি হলো গতকালের। তিনটি রিপোর্টেরই সব বক্তব্য, রোগের বর্ণনা, শারীরিক অবস্থার বর্ণনা একই রকম।
তিনি আরও বলেন, আমি শুনানিতে বলেছি দুই মামলায় উনাকে (খালেদা জিয়া) মোট ১৭ বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। কাজেই একে বলা যাবে না এটা শর্ট সেন্টেন্স। সুতরাং এখানে তিনি জামিন পেতে পারেন না। চিকিৎসার বিষয়ে সরকার সর্বাত্মক সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে তাকে বিএসএমএমইউ‘র প্রিজন সেলে রাখার কথা, কিন্তু তাকে ভিআইপি কেবিনে রাখা হয়েছে। ওনাকে সেবাদান করার ক্ষেত্রে একজন সেবিকাও দেওয়া হয়েছে। সার্বক্ষণিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওনাকে দেখভাল করছেন। কিন্তু ওনার অনুমতি না হলে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে না বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
জামিন পেলেন না খালেদা জিয়া, ‘সম্মতি’ পেলে উন্নত চিকিৎসার নির্দেশ