‘প্রতিকূলতাকে জয় করার উৎসাহ ছিল আবেদ ভাইয়ের’

সৈয়দ মনজুরুল ইসলামবেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের সদ্যপ্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ প্রসঙ্গে শিক্ষাবিদ ও কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেছেন, ‘আবেদ ভাইয়ের আর আমার বাড়ির মাঝে ১০০ গজ দূরত্ব। অনেক কাছের মানুষ ছিলাম আমি। তিনি সব সময় মনে করিয়ে দিতেন যে, আমরা তো দেশের (একই এলাকার) মানুষ। আমি দেখতাম, তার ভেতরে উৎসাহ ছিল প্রতিকূলতাকে জয় করার।’

শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের আয়োজনে ‘শিক্ষার অগ্রযাত্রায় স্যার আবেদের ভূমিকা’ শীর্ষক বৈঠকিতে তিনি একথা বলেন। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকালে শুরু হয় বাংলা ট্রিবিউনের সাপ্তাহিক এই আয়োজন।

স্যার আবেদের প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এগিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালের পর দেশে ফিরে এসে তিনি সেই হাওর অঞ্চলেই গেলেন। মানুষ তখন কত প্রতিকূলতার মধ্যে ছিল। মানুষের মধ্য থেকে প্রতিকূলতা দূর করতে হবে– এটি ছিল তার প্রথম মন্ত্র। আমি মনে করি আবেদ ভাই কতকগুলো মন্ত্রের সমষ্টি। এই মন্ত্রগুলোকে তিনি পবিত্র জ্ঞান করতেন। হাঁটু ভেঙে পড়ে থাকা যাবে না– সেই দর্শন ছিল তার।’

তিনি আরও বলেন, ‘হাওর এবং চরাঞ্চলে অনেক প্রতিকূলতা থাকে বলে অনেক শিশু শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ে। তিনি সেইসব ঝরে পড়া শিশুদের শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসার কথা ভাবতেন। তার শিক্ষার সবচেয়ে বড় মন্ত্র ছিল, অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা হতে হবে। ছেলে-মেয়ে, বৃদ্ধ-তরুণ প্রত্যেকের অধিকার আছে শিক্ষার। তার তৃতীয় মন্ত্র ছিল, প্রকৃতি থেকে জ্ঞান নেওয়ার। আমাদের যে সহজ জ্ঞান গ্রামে হারিয়ে যাচ্ছে, তার জন্য গ্রামের মানুষের মালিকানা থাকবে– এরকম একটা সংগঠন প্রয়োজন। ফলে ব্র্যাকে কেউ কোনোদিন তাকে স্যার বলতে পারেনি। আমরা যে এখানে তাকে নিয়ে হাস্যোজ্জ্বল আলোচনা করছি, এটা আবেদ ভাই দেখলে খুশি হতেন। কারণ ভেঙে পড়া, বিপন্ন হয়ে যাওয়া তিনি পছন্দ করতেন না।’    

সাংবাদিক মুন্নী সাহার সঞ্চালনায় আজকের বৈঠকিতে আরও অংশ নিয়েছেন– বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) অধ্যাপক মুহাম্মদ ইব্রাহিম, ব্র্যাক এডুকেশনের পরিচালক শফিকুল ইসলাম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব এডুকেশনালের নির্বাহী পরিচালক ইরাম মারিয়াম, ব্র্যাকের প্রিভেন্টিং ভায়োলেন্স এগেইনস্ট উইম্যান ইনিশিয়েটিভের পরিচালক নবনীতা চৌধুরী।  

রাজধানীর পান্থপথে বাংলা ট্রিবিউন স্টুডিও থেকে এ বৈঠকি সরাসরি সম্প্রচার করে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন নিউজ। পাশাপাশি বাংলা ট্রিবিউনের ফেসবুক ও হোমপেজে লাইভ দেখা গেছে এ আয়োজন।

ইউল্যাবের সহযোগিতায় বৈঠকিটি অনুষ্ঠিত হয়।