নুর ও তার নেতাকর্মীরাই ফুটেজ গায়েব করেছে: সাদ্দাম

ঢাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে আহত নুরসহ তার অনুসারীদেরই ফুটেজ গায়েব করার জন্য অভিযুক্ত করলেন ডাকসুর এজিএস ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ভবনে গত (২২ ডিসেম্বর) হামলার শিকার হয়ে আহত হওয়া ভিপি নুর ও তার সংগঠনের নেতাকর্মীরাই সেখানে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ গায়েব করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। আজ রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় ডাকসু ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন।

সাদ্দামের অভিযোগ, সেদিন (২২ ডিসেম্বর) ভিপি নুরুল হকের সংগঠনের নেতাকর্মীরা আগেই মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। সে ঘটনাকে লুকাতে এই সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব করা হয়।

তার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন সাদ্দাম হোসেনকে ‘হামলার নির্দেশদাতা’ অ্যাখ্যা দিয়ে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সেদিন ডাকসু ভিপি নুরুল হক ও তার সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার নির্দেশদাতা ছিল সাদ্দাম হোসেন এবং ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস। তাদের এধরনের বক্তব্য ভিত্তিহীন। কেউ হামলায় আহত হলে তার প্রমাণ থাকে। তাদের কোনও নেতাকর্মী হাসপাতালে ভর্তি হয়নি, আইসিইউতে থাকতে হয়নি। বরং আমাদের যারা আহত হয়েছে, তারা এখনও হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছেন। কেউ কেউ আইসিইউতে রয়েছেন। সেদিন হামলার পর পরই প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা তাদের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়েছেন। যারা গুরুতর আহত ছিল তারা কীভাবে সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব করলো, এটা বোধগম্য নয়। মূলত হামলাকারীরাই সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব করেছে। আমরা শুরু থেকেই এই ফুটেজ উদ্ধারের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু এখনও সেটি উদ্ধার করতে প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘গত ২২ ডিসেম্বর ডাকসু ভবনে হামলার যে ন্যক্কারজনক ঘটনাটি  ঘটেছে, সেটি ভিপি নুর ও তার সংগঠন দ্বারা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ (বুলবুল-মামুন অংশ) নামক একটি সংগঠনের ওপর গত ১৭ ডিসেম্বর হামলার জের ধরে ঘটে। সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ বেশ কিছুদিন যাবৎ বিবদমান। পাল্টাপাল্টি বক্তব্য, কর্মসূচি ও সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে সংগঠন দুটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির কাজে লিপ্ত। উভয় সংগঠন নিজেদের সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধি ও অস্তিত্ব জানান দেওয়ার নাম করে মিডিয়াবাজির মাধ্যমে পরিচিতি লাভের অভিপ্রায় থেকে এমন হীন কর্মে নিয়োজিত।

তিনি আরও জানান, ওইদিনের সংঘর্ষে উপস্থিত না থেকেও ডাকসুর কয়েকজন প্রতিনিধির নামে মামলার অভিযোগ দায়ের করা হয়। তারা এসব মিথ্যা মামলার অভিযোগ প্রত্যাহারের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে ডাকসুর সহ-সাধারণ সম্পাদক কিছু দাবি উত্থাপন করেন। সেগুলো হচ্ছে−১.ডাকসু নেতৃবৃন্দ, সিনেট সদস্য, হল সংসদের নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা মামলার অভিযোগ প্রত্যাহার করতে হবে, ২. ডাকসু ভবনের ভেতরে অবস্থান নেওয়া নুরের সহযোগী বহিরাগতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, ৩. ডাকসু ভবন ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত উভয়পক্ষের সদস্যদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, ৮. ডাকসু ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে, ৫. দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ডাকসু ভিপিকে পদত্যাগ করতে হবে। নুরের দুর্নীতি তদন্তে কমিটি গঠন করতে হবে, ৬. সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় নুরকে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে, অন্যথায় তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইন অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন তারা।