রাজউকের জমিতে দোকান, প্রভাবশালীদের মাসে আয় ৫৫ লাখ টাকা

দুদকরাজধানীর উত্তরায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) জমিতে অবৈধভাবে মার্কেট নির্মাণের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দদক) এনফোর্সমেন্ট ইউনিট। বুধবার (১ জানুয়ারি) উত্তরার ৭, ৯, ১১ ও ১৩ নম্বর সেক্টরে এই অভিযান চালানো হয় বলে জানান দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য। দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শেখ গোলাম মাওলা ও উপসহকারী পরিচালক মুহাম্মদ শিহাব সালামের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানের সময় দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম, রাজউক ও ডেসকো সমন্বিতভাবে দখল হওয়া জমি পরিদর্শন করে। এ সময় দেখা যায়, উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ২৯ নম্বর থেকে ৮১ নম্বরে অধিকাংশ প্লট অবৈধভাবে দখল করে সেখানে আসবাবপত্রের দোকান, খাবারের হোটেলসহ অন্যান্য দোকানপাট তৈরি করা হয়েছে। ৭, ৯ ও ১১ নম্বর সেক্টরের চিত্র একই রকম।
এ বিষয়ে দোকানদাররা বলেন, ‘তারা উত্তরা এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছ থেকে প্লটগুলো ভাড়া নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।’দুদক এনফোর্সমেন্ট টিম জানায়, সেখানে ৬০টির মতো দোকান গড়ে তোলা হয়েছে। প্রতিটি দোকানের ভাড়া ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। এ বিষয়ে রাজউকের কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা এনফোর্সমেন্ট টিমকে সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি।’
এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অবৈধভাবে আবাসিক বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার প্রমাণ পেয়েছে দুদক টিম। অভিযানে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্নের পাশাপাশি দোকান মালিকদের রাজউকের জমি ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। দুদক টিম জানায়, রাজউকের জমি দখলে রাখা বেশ কয়েকজন স্থানীয় প্রভাবশালীর নাম, পরিচয় সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। রাজউকের জমিতে গড়ে উঠা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান থেকে ওই প্রভাবশালীদের মাসিক আয় ৫০ থেকে ৫৫ লাখ টাকা। এ বিষয়ে সুপারিশসহ কমিশনের কাছে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেবে দুদক টিম।
দুদক জানায়, উত্তরায় রাজউকের প্লটের মালিকানা সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অধিকাংশ প্লটের ক্ষেত্রে কোনও বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। কয়েকটি প্লটের ক্ষেত্রে আদালতে মামলা চলছে। অভিযানের সময় রাজউকের কর্মকর্তারা জানান, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট প্লটগুলোতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে রাজউক একাধিকবার উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু দখলদারের কাছ থেকে রাজউকের জমি দখলমুক্ত করা যায়নি।