রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হওয়া ৩ কুকুরের একটির মালিক পিংক সিটি আবাসিকের বাসিন্দা ও অ্যানিমেল লাভার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সাদিয়া সালমা সিদ্দিকা সাথী অভিযোগ করে বলেন, কুকুরের মৃত্যুর ঘটনা বলে পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে না। এর ফলে পিংক সিটিতে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। এক সপ্তাহ আগে ৩ জানুয়ারি আরও দুটো কুকুর নিখোঁজ হয়েছে। তদন্তে পুলিশের আগ্রহ খুবই কম। পুলিশের কাছ থেকে তারা সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে দাবি করেন তিনি।
তবে পুলিশ বলছে, এই ঘটনাটি আমলের অযোগ্য অপরাধ। থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে তদন্ত চলছে। মৃত কুকুরের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে না আসায় পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন এখনও প্রস্তুত হয়নি।
রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হওয়া বাকি দুটি কুকুরের মালিক চলচ্চিত্রনির্মাতা শাহনেওয়াজ কাকলী।
সাথী ও কাকলীর অভিযোগ ছিল, পরিকল্পিতভাবে বিষ প্রয়োগে কুকুরগুলোকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সাথীকে মোবাইল ফোনে একজন হুমকিও দেয়। পরে খিলক্ষেত থানায় করা জিডির পরিপ্রেক্ষিতে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে ৭ নভেম্বর দুপুরে দুটি কুকুরের (মিল্কি ও লিও) মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার সেন্ট্রাল ভেটেরিনারি হসপিটালে (কেন্দ্রীয় পশু হাসপাতাল) পাঠানো হয়। পরদিন ৮ নভেম্বর নিখোঁজ ৮ কুকুরের মধ্যে দুটি ফিরে আসে। বাকি ৬টি কুকুর এখনও নিখোঁজ রয়েছে।
সাথী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আড়াই মাসেও কাউকে শনাক্ত বা রহস্য উদঘাটন করতে পারছে না পুলিশ। তাদের যথাযথ সহযোগিতা না থাকার কারণে পিংক সিটিতে আবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। গত ৩ জানুয়ারি আমার সবচেয়ে প্রিয় কুকুর (টাইগার) নিখোঁজ হয়েছে। এছাড়া পালিত একটি বেড়াল বাসার সামনে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এছাড়াও ৮ নম্বর রোডের আরও একটি কুকুর (ম্যাক্স) নিখোঁজ হয়েছে। আগের ঘটনাটি পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করলে আর এমনটা ঘটতো না।’
আরও পড়ুন...
ঘটনার তদন্তে পুলিশকে পিংক সিটি আবাসিক এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিন্তু তারপরও অপরাধীদের শনাক্ত করতে পারছে না পুলিশ। ঘটনাটিকে তারা গুরুত্বই দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
পিংক সিটি আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা জানান, এই আবাসিক এলাকার ম্যানেজমেন্ট কমিটির ম্যানেজার মাইদুল। অফিসের চাবি তার কাছেই থাকে। কুকুরগুলো যে সময় নিখোঁজ হয় তখন পুরো এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। যদি অফিসের চাবি কমিটির ম্যানেজারের কাছে থাকে, তবে এটা বন্ধ করলো কে?
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও খিলক্ষেত থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শাহজাহান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত চলছে। মৃত দুটি কুকুরের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এবং ভিসেরা প্রতিবেদন এখনও হাতে পাইনি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে না পাওয়া পর্যন্ত তেমন কোনও অগ্রগতি নেই।’ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞরা যে মতামত দেবেন সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
জিডির বাদী সাথীকে মোবাইল ফোনে হুমকি দেওয়া ব্যক্তির বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এমন কিছু আমি পাইনি, আমার নলেজে নাই। এটা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভালো জানবেন।’ তিনি শুধু জিডির তদন্ত কর্মকর্তা বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।