‘ইসি সচিবের বক্তব্যে ঢাবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অপমান করা হয়েছে’

রাজু ভাস্কর্যের সামনে শিক্ষার্থীদের অনশন কর্মসূচিসিটি নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে কমিশনের সিনিয়র সচিবের দেওয়া বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন আন্দোলনকারীরা। তারা বলেছেন, ‘শিক্ষার্থীরা না বুঝে আন্দোলন করছেন’, ইসি সচিবের এমন বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা শিক্ষার্থীদের অপমান করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এমন বক্তব্য বা বিবৃতি দেওয়া হলে ছাত্রসমাজ মেনে নেবে না।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) টিএসসির সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে চলমান অনশনের দ্বিতীয় দিনে শিক্ষার্থীরা এমন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ঢাবি শিক্ষার্থীদেরকে অবিবেচক, নবীন ও অবুঝ বলে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দেওয়া হচ্ছে। এর দায়ভার কমিশনকেই নিতে হবে।

তারা আরও বলেন, বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ ও ডাকসুর পক্ষ থেকে কমিশনের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবিতে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। তারাও কি অবুঝ? আপনারা কমিশন সুপ্রিম কোর্টে আপিল শুনানির দিন আপনাদের আইনজীদের মধ্যমে বিষয়টি আদালতকে জানাবেন। নির্বাচন না পেছালে অনশন অব্যাহত থাকবে বলেও জানান শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ঢাবির শিক্ষার্থীরা জানে কিভাবে রাষ্ট্রঘোষিত অসাম্প্রদায়িক দেশ গঠন করতে হয়। অনতি বিলম্বে পূজার দিন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করায় দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিতে হবে ও তারিখ পরিবর্তন করতে হবে।

শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তোলেন, নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্র এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। এ অবস্থায় কিভাবে নাগরিকরা ধর্মীয় উৎসব পালন করবেন?

অনশনের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষার্থীকে নেওয়া হচ্ছে ঢামেকেএদিকে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের দাবিতে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের তিন জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। শিক্ষার্থীরা হলেন অপূর্ব চক্রবর্তী, অর্ক সাহা ও জগন্নাথ হল ছাত্র সংসদের জিএস কাজল দাস। অপূর্ব চক্রবর্তী এবং অর্ক সাহাকে দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আর কাজল দাসকে রাজুকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, সরস্বতী পূজার দিন সিটি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই তারিখ পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছে আন্দোলনকারীরা। প্রথমে ডাকসুর পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের প্রতি তারিখ পরিবর্তনের দাবি জানানো হয়। পরে শিক্ষার্থীরা একই দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। সর্বশেষ তারা দুই দফায় কিছু সময়ের জন্য শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। পরে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে আমরণ অনশনে যান কিছু শিক্ষার্থী। তাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, টিএসসি ভিত্তিক বিভিন্ন সংগঠন এবং ডাকসুর প্রতিনিধিরা সংহতি জানিয়েছেন।