ডেঙ্গু নিধনে ব্যর্থতা, বিচার বিভাগীয় প্রতিবেদন দাখিলে ১ মার্চ পর্যন্ত সময়

সুপ্রিম কোর্ট

ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নির্মূলে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থতার কারণ এবং দায়ীদের চিহ্নিত করতে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিল করতে আগামী ১ মার্চ পর্যন্ত সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

প্রতিবেদন দাখিলে দুই মাস সময় চেয়ে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে সময় আবেদনের বিষয়টি উত্থাপন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার কাজী মাইনুল হাসান।

এদিকে, গত ১৬ জানুয়ারি হাইকোর্টে করা বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রধান ঢাকার জেলা জজ হেলাল চৌধুরীর স্বাক্ষরিত আবেদনে জানানো হয়, হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত অনুসন্ধান কমিটি গত ১০ ডিসেম্বর ও ৬ জানুয়ারি দুটি সভা করেছে। ৬ জানুয়ারি সভার সিন্ধান্ত মোতাবেক ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়ার কারণ, প্রতিকার, দমন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে।

‘ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীট-তত্ত্ব বিভাগের একজন করে শিক্ষক, আইসিডিডিআরবির বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি, সরকারের প্ল্যান প্রটেকশন বিভাগের একজন এবং ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথের প্রতিনিধির কাছে এ মতামত চেয়েছেন কমিটি। এ কারণে প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে আরও সময় প্রয়োজন। এছাড়াও ওই আবেদনে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নির্মূলে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থতার কারণ এবং দায়ীদের চিহ্নিত করতেও কাজ চলছে বলে আবেদনে জানানো হয়েছে। তাই হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে আরও ২ মাস সময় চাওয়া হয়। তবে আদালত শুনানি নিয়ে আগামী ১ মার্চ পর্যন্ত সময় মঞ্জুরের আদেশ দেন।।

এর আগে ২০১৯ সালেল ১২ নভেম্বর এক আদেশে ঢাকা জেলা জজের নেতৃত্বে দুই সদস্যের বিচার বিভাগীয় কমিটিকে বিষয়টি তদন্ত করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। কমিটির অপর সদস্য হলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিবের নিচে নয় এমন একজন কর্মকর্তা। এই কমিটিকে গত ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১৪ জুলাই আদালত তার আদেশে ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া প্রতিরোধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটির মেয়র, নির্বাহী কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

একইসঙ্গে নাগরিকদের ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়াসহ এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়া বন্ধ করতে এবং এডিস মশা নির্মূলে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন আদালত।

পরে ওই বিষয়ে দুই সিটির পক্ষ থেকে গত ২২ জুলাই হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। কিন্তু সেই প্রতিবেদনে আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান দুই স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে তলব করলে গত ২৫ জুলাই তারা সশরীরে হাজির হয়ে আদালতে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। যার ধারাবাহিকতায় গত ২৬ আগস্ট ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ ও এডিস মশার আবাসস্থল ধ্বংসে ঢাকাসহ সারাদেশে ব্যাপকভাবে ওষুধ ছিটানো ও অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।