মিন্নির মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ ও মামলা বাতিল চেয়ে করা রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। মিন্নির আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এসএম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে মিন্নির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্না। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এফআর খান।

এরআগে গত ১ জানুয়ারি রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালত। পরে এই অভিযোগ গঠনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে জামিনে থাকা মিন্নি চলতি সপ্তাহে হাইকোর্টে আবেদন করেন।

মিন্নির অন্যতম আইনজীবী মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম বলেন, রিফাত শরিফ হত্যা মামলাটি নিজের ক্ষেত্রে বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন মিন্নি। তবে এরইমধ্যে ওই মামলায় বরগুনার আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। তাই হাইকোর্টের কাছে আবেদনটি না চালানোর কথা বলে ফেরত চাওয়া হয়। এরপর আদালত আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি বলে খারিজ করে দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, মিন্নির মামলাটি বরগুনার জেলা দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। এই আদালত থেকে অন্য আদালতে মামলাটি বদলের জন্য উচ্চ আদালতে শিগগির আবেদন করা হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের বাধা দিয়েও স্বামীকে রক্ষা করতে পারেননি। পরে গুরুতর আহত রিফাত বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয় জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পরে ওই বছরের ১৬ জুলাই সকাল পৌনে ১০টার দিকে মিন্নিকে তার বাবার বাড়ি বরগুনা পৌর শহরের নয়াকাটা-মাইঠা এলাকা থেকে পুলিশ লাইনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়। এরপর দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পরদিন (১৭ জুলাই) মিন্নিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরপর কয়েক দফা আবেদন জানালেও নিম্ন আদালতে জামিন মেলেনি মিন্নির। পরে একই মামলায় গত ২৯ আগস্ট মিন্নি হাইকোর্টে জামিন পান।