ওয়াসার এমডি তাকসিম খানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল

ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান (ছবি- সংগৃহীত)

আদালতের রায় ও আদেশ অনুসারে বুড়িগঙ্গা নদীর দূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা এবং অসত্য তথ্য দিয়ে আদালতকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তাকে এ রুলের জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। ওয়াসার এমডি’র পক্ষে ছিলেন আইনজীবী উম্মে সালমা। আর পরিবেশ অধিদফতরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করিম।

পরে মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘দুই সপ্তাহের মধ্যে কেন আদালত অবমাননার অভিযোগে ওয়াসার এমডিকে শাস্তি দেওয়া হবে না, সেই রুলের জবাব লিখিত আকারে দাখিল করতে বলা হয়েছে। আমরা তার ব্যক্তিগত হাজিরা চেয়েছিলাম। আদালত বলেছেন, দুই সপ্তাহ পর যখন জবাব আসবে, তখন বিবেচনা করবেন।’

এর আগে ২০১০ সালে বুড়িগঙ্গার পানি দূষণ বন্ধে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে মনজিল মোরসেদ একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। ২০১১ সালে রায় দিয়ে আদালত ছয় মাসের মধ্যে বুড়িগঙ্গার ভেতরে যে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিসচার্জ লাইনগুলো (শিল্প বর্জ্য নিঃসরণ লাইন) আছে, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়ার জন্য ওয়াসার এমডির প্রতি নির্দেশ দেন। ২০১৪ সালে পরিবেশ অধিদফতর বিদুৎ সংযোগ কেটে দেয়। ২০১৬ সালে আপিল বিভাগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পরে পরিবেশ অধিদফতরের কার্যক্রম বৈধ হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু তিন বছরেও কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় ফের ২০১৯ সালে একটি সম্পূরক আবেদন করা হয়। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে বুড়িগঙ্গার দূষণ রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা না নেওয়ার জন্য তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়।

ওই অভিযোগের ভিত্তিতে আদালত ওয়াসাকে বুড়িগঙ্গায় থাকা সুয়ারেজ লাইন সম্পর্কে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। পরে ওয়াসার প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াসার কোনও লাইন বুড়িগঙ্গায় নেই। অন্যদিকে বিআইডব্লিউটিএ প্রতিবেদন দিয়ে ৬৮টি লাইন থাকার তথ্য আদালতকে জানায়। এর মধ্যে ওয়াসার লাইন ৫৮টি।

এরপর আদালত এক আদেশে অসত্য তথ্য দেওয়ার জন্য ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চান এবং আদালতের নির্দেশ পালনে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন। এরপর ২/৩ বার আদালতে প্রতিবেদন দেয় ওয়াসা। কিন্তু কোনও প্রতিবেদনে আদালতের নির্দেশ পালনের পদক্ষেপ তারা দেখাতে পারেনি। তাই ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।