সিটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর চেয়েও বেশি ভোট পেয়েছেন গণফ্রন্টের প্রার্থী আবদুস সামাদ সুজন। মাছ প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ১২ হাজার ৬৮৭ ভোট। এর চেয়েও বেশি ভোট পেয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আবদুর রহমান। হাতপাখা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২৬ হাজার ৫২৫ ভোট।
অবশ্য প্রথম দিকে দক্ষিণের মেয়র নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসকে সমর্থন দিয়ে নিজেদের প্রার্থী প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছিল জাতীয় পার্টি। সে সিদ্ধান্ত বদল করে ৯ জানুয়ারি বিকাল ৪টায় মেয়র পদের নির্বাচনে থাকার কথা জানায় জাতীয় পার্টি। ওইদিন জাপা মহাসচিব রাঙ্গা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মেয়রপ্রার্থী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলনকে জয়ী করতে দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন।
এছাড়া দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ঢাকা-৪ এবং ঢাকা-৬ আসনে রয়েছে জাতীয় পার্টি সংসদ সদস্য। ঢাকা-৪ আসনে দলটির সংসদ সদস্য আবু হোসেন বাবলা। আর ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। জাতীয় পার্টির এই দুই সংসদ সদস্যই দলের গুরুত্বপূর্ণ ও নীতি নির্ধারণী পদে রয়েছেন। এমন অনুকূল পরিবেশেও ভোটার টানতে পারেননি জাপা মনোনীত প্রার্থী। এই অবস্থায় নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা প্রশ্ন তুলেছেন, ভোটের রাজনীতিতে কি হাতপাখার থেকেও পিছিয়ে পড়েছে লাঙল?
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী ঢাকা দক্ষিণের মোট ১,১৫০টি কেন্দ্রের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস নৌকা প্রতীকে ৪ লাখ ২৪ হাজার ৫৯৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ইশরাক হোসেন ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ২ লাখ ৩৬ হাজার ৫১২ ভোট।
এছাড়া বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. আক্তারুজ্জামান ওরফে আয়াতুল্লাহ ডাব প্রতীকে দুই হাজার ৪২১ এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. বাহারানে সুলতান বাহার আম প্রতীকে তিন হাজার ১৫৫টি ভোট পেয়েছেন।
এদিকে প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) অনুষ্ঠিত ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট প্রদানের হার ছিল খুবই কম। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করতে গিয়ে কমিশন জানায় দক্ষিণে ২৯.০০২ এবং উত্তরে ২৫.৩০ শতাংশ ভোট কাস্টিং হয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মোট ভোটার ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ লাখ ৯৩ হাজার ৪৪১ এবং নারী ভোটার ছিলেন ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৫৩ জন। ৭৫টি সাধারণ ওয়ার্ডের পাশাপাশি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড রয়েছে ২৫টি।
অন্যদিকে ঢাকা উত্তরে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী মো. আতিকুল ইসলাম পেয়েছেন ৪ লাখ ৪৭ হাজার ২১১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তাবিথ আউয়াল পেয়েছেন ২ লাখ ৬৪ হাজার ১৬১ ভোট। এছাড়াও হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলনের শেখ ফজলে বারী মাসউদ পেয়েছেন ২৮ হাজার ২০০ ভোট, কাস্তে প্রতীকে কমিউনিস্ট প্রার্থী আহম্মেদ সাজেদুল হক রুবেল পেয়েছেন ১৫ হাজার ১২২ ভোট, আম প্রতীকে আনিসুর রহমান দেওয়ান পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৫৩ ভোট এবং বাঘ প্রতীকে শাহীন খান পেয়েছেন ২ হাজার ১১১ ভোট।
উত্তর সিটি করপোরেশনে ভোট প্রদানের হার দক্ষিণের থেকেও কম। মাত্র ২৫.৩০ শতাংশ ভোট কাস্ট হওয়ার তথ্য জানিয়েছে কমিশন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ৩০ লাখ ১২ হাজার ৫০৯ জন। ওয়ার্ড সংখ্যা ৫৪, সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১৮।