হুইপ সামশুল হকের মামলায় জামিন পেলেন ওসি সাইফ আমিন

আদালত

জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ তথ্য উপস্থাপন করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) সাইফ আমিনকে জামিন দিয়েছেন আদালত।

রবিবার (১৬ ফেবুয়ারি) বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলার আসামি ওসি সাইফ আমিন তার আইনজীবীর মাধ্যমে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণের পর জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে  ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন ৫০০ টাকা মুচলেকায় আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত তাকে জামিন দেন।

সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের পেশকার শামীম আল মামুন বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।          

এদিন ওসি সাইফ আমিনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি আসামি সাইফ আমিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন  জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, চট্টগ্রাম আবাহনী ক্লাবের জুয়ার আসর থেকে গত পাঁচ বছরে ক্লাবটির মহাসচিব ও জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরী ১৮০ কোটি টাকা আয় করেছেন বলে গত ২০ সেপ্টেম্বর রাত একটা ৫৭ মিনিটে নিজের ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট দেন পুলিশ পরিদর্শক সাইফ আমিন। পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘ক্লাব-জুয়া-সাংসদ এবং ওসি- ক্যাসিনো, ফ্লাশ, হাউজি, হাজারি, কাইট, পয়সা (চান তারা) এগুলো আবহমানকাল থেকেই মহানগর ও জেলা সদরের ওসিদের বিনা ঝামেলায় মোটা টাকা পাওয়ার পথ। মহানগরের ফ্ল্যাটকেন্দ্রিক দেহব্যবসা ম্যাসেস পার্লারগুলো ওসি সাহেবদের দ্বিতীয় ইনকাম জেনারেটিং অ্যাসিসট্যান্স করে, থানার ক্যাশিয়ার কালেকশন করে ওসির প্রতিনিধি হিসেবে। ক্লাব পাড়ায় ওসিরা এই দুই খাত থেকেই দৈনিক পাঁচ লাখ করে নিলেও মাসে সেটা দেড় কোটিতে পৌঁছায়। এবার আছে থানার সিভিল টিম, সিয়েরা ডে/নাই, লিমা ডে/নাইট/গফ ডে নাই। এরপর ডিবি।’

তিনি আরও লেখেন, ‘ডিবি কলেকটিভ নেয় না, লিস্ট অনুযায়ী ইন্ডিভিজুয়াল কালেকশন। প্রতি মাসে স্ব স্ব ইউনিট কর্মরত অফিসারদের তালিকা আপডেট করে হাউজগুলোতে পাঠানো হয়। বাকি থাকে মাদক, ওসিরা এখন মাদকের টাকা নেয় না। মফস্বলের ওসিরা চায় সারাবছর মেলা। মেলা মানে ধামাকা ধামাকা নৃত্য, জুয়া, হাউজি ওয়ান/টেন আর ডাব্বা খেলা। দৈনিক ওসির ৫০ হাজার, মাসান্তে ১৫ লাখ, তিন মাস চললে ৪৫। বাসা আগের পোস্টিং ফ্রি, আর পরেরটা মজুত। বাকি দিনে যা পান সব বোনাস। ঢাকায় মেনন সাহেব একটি চেয়ার অলঙ্কৃত করেছেন। দোষের কিছু নাই। রাজনীতি বলে নকশালীরা টাকশালী। অর্থাৎ টাকশালের মালিক তারা হন।’
মামলার অভিযোগে আরও  বলা হয়, চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে বাদীর কোথাও নাম আসে নাই। তাই বাদীর বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন, যা প্রকাশের মাধ্যমে বাদী সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।