আবরারের নামে বুয়েটে ‘হলের নামকরণ’ কর্মসূচিতে পুলিশি বাধার অভিযোগ

777বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নিহত ছাত্র আবরার ফাহাদের নামে একটি হলের নামকরণের দাবিতে ডাকা কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে পূর্বঘোষিত এ কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দেয় বলে অভিযোগ করেন নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন। তবে পুলিশের পক্ষে থেকে এ অভিযোগ ‘সত্য নয়’ বলে দাবি করা হয়।

জানা যায়, বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদের নামে একটি হলের নামকরণ, বা তার নামে নতুন একটি হল নির্মাণ, বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যবর্তী রাস্তাকে ‘আবরার ফাহাদ সরণি’ নামকরণ, আবরার ফাহাদের মা-বাবা, ভাইবোনদের নিরাপত্তা ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদসহ কয়েকটি দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করতে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আসেন ‘নাগরিক পরিষদ’-এর ২০ থেকে ২৫ জন নেতাকর্মী। এ সময় শাহবাগ থানার পুলিশ তাদের বাধা দেয়।

নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বুয়েটে নিহত ছাত্র আবরার ফাহাদের নামে একটি ছাত্রাবাসের নামকরণ করার দাবিসহ আরও কয়েকটি দাবিতে আমরা মানববন্ধন পালন করতে রাজু ভাস্কর্যে যাই। সেখানে কর্মসূচির প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পুলিশের পক্ষ থেকে আমাদের বাধা দেওয়া হয়েছে। এমনকি কর্মসূচি পালন না করতে বাধ্য করা হয়েছে। আর সীমান্ত হত্যার বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলেই রাষ্ট্রপক্ষ আমাদের নানাভাবে বাধা দিচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘পুলিশি বাধার প্রতিবাদে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ২৩ দিন ধরে অবস্থানরত শিক্ষার্থী নাসির আবদুল্লাহর সঙ্গে আমরা সংহতি জানাতে গিয়েছি। কিন্তু পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয়েছি। এর আগেও আমরা সুষমা স্বরাজের আগমন উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে মুখে কালো পতাকা বেঁধে কর্মসূচি পালন করতে গেলে সেদিনও পুলিশ আমাদের বাধা দিয়েছিল।’

এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ শামসুদ্দীন জানান, ‘আমরা ভারতীয় আগ্রাসন এবং সীমান্তে মানুষ হত্যার বিষয়ে সংগঠনের পক্ষে থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। ফেলানী হত্যার বিচার দাবি করে অনেক কর্মসূচি পালন করেছি। এজন্য আমাদের বারবার বাধা দেওয়া হচ্ছে।’ কর্মসূচির পালন করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে শামসুদ্দীন বলেন, ‘না, আমরা কোনও অনুমতি নেইনি। আর নাসির আবদুল্লাহ তো এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী। তার অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে প্রশাসন এখন পর্যন্ত কোনও বাধা দেয়নি। নাসির আবদুল্লাহর সঙ্গে প্রতিদিন অনেকে এসে সংহতি জানাচ্ছেন। সিই হিসেবে আমরাও সংহতি জানাতে এসেছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রইসউদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তাদের বাধা দেওয়া হয়নি। বইমেলা উপলক্ষে এই এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা থাকার কারণে তাদের বলেছি, মেলা শেষ হলে কর্মসূচি পালন করতে বা অন্য কোথাও করতে বলা হয়েছে তাদের। বুঝিয়ে বলার পর তারা চলে যান।’ এ ধরনের অভিযোগ সত্য নয় বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

উল্লেখ্য, সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ২৩ দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী নাসির আবদুল্লাহ।